দেশের খবর: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে শাকিল (১০) নামে এক মাদ্রসাছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার সকালে উপজেলার ভিটা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল স্থানীয় আলহাজ্ব মরহুম রজব উদ্দিন নূরাণী ও হাফিজিয়া মাদ্রার ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসী রফিয়াল (৩৮), জোবায়ের (১৮), হাফিজ উদ্দিন (৫৫) ও জোবাইদুল ইসলামসহ (২৫) মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিদিনের মতো সকাল সাড়ে ৮টায় শাকিল মাদ্রাসাটিতে পড়তে আসে। এসে দেখে শিক্ষক শাহাজালাল তখনও মাদ্রাসায় আসেননি। তখন শাকিল সহপাঠিদের সঙ্গে গল্পগুজব করছিল। এ সময় বহরের ভিটা গ্রামের মৃত সামছুল হকের ছেলে মাদকাসক্ত মো রেজাউল করিম রেজা (৩৫) মাদ্রাসাটির দরজায় এসে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিলেন। এ সময় শাকিল তাকে বলে, তোমাকে দেখলে সকল ছাত্র ভয় পায়। তুমি এখান থেকে চলে যাও।’ এ সময় রেজা শাকিলকে শ্রেণিকক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যায়।
শাকিলের সহপাঠী পুটিমারী কাজল ডাংগা গ্রামের বিজু মিঞার ছেলে জাহিদ (১০) ও একই গ্রামের মো. আনারুল ইসলামের মেয়ে মোছা. সারা খাতুন (৯) জানায়, রেজা শাকিলকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে প্রথমে তার পা ধরে শূন্যে কিছুক্ষণ ঘুড়ায়। এরপর মাদ্রাসা সংলগ্ন মিল চাতালের দক্ষিণ পূর্ব পাশে নিয়ে গিয়ে সহপাঠীদের সামনেই শাকিলের মাথা একটি ইটের ওপর রেখে আরেকটি ইট দিয়ে থেঁতলে দেয়। এ সময় তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় কসাই মান্নার ছেলে রেজাউল দৌঁড়ে এসে রেজাকে জাপটে ধরে ফেলে। পরে গ্রামবাসীরা এসে রেজাকে চাতাল সংলগ্ন গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে থানায় খবর দেয়। অপরদিকে গুরুতর আহতাবস্থায় শাকিলকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাকিলকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রংপুর নিয়ে যাওয়ার পথে উলিপুরের গুনাইগাছ এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সেই শাকিল মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। সন্তানের নির্মম মৃত্যুর খবর শুনে শাকিলের বাবা-মা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন।
শাকিলের ভাই শুকুরানা (১৮) বলেন, আমার ভাইয়ের খুনির বিচার চাই। তার কি অপরাধ ছিল? কেন তাকে এতো নির্মমভাবে হত্যা করা হলো।
চিলমারী থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, খুনি রেজাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।