ফিচার

সাতক্ষীরায় ডিটেকটিভ ‌’অলোকেশ রয়’ চরিত্রের স্রষ্টা অরুণ বিশ্বাসের সাথে সাহিত্য আড্ডা

By Daily Satkhira

November 04, 2019

বাবলু ভঞ্জ চৌধুরী: হেমন্তের ঝকঝকে সকাল। ব্যস্ততা বাড়ছে সাতক্ষীরা শহরে। হঠাৎ উপস্থিত হলেন ফেলুদার জ্ঞাতি ভাই! না না, চমকানোর কিছু নেই। ফেলুদার মতো প্রাইভেট ডিটেকটিভ “অলোকেশ রয়”। অবশ্য অলোকেশ রয় এখনও বইয়ের মধ্যে। নামটি লোকমুখে ছড়াচ্ছে কেবল।বাংলা গোয়েন্দা কাহিনির ইতিহাসে এটি একটি নতুন চরিত্র। সেটি পাঠকের মাঝে আরো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সাক্ষাৎ হাজির হলেন তার স্রষ্টা স্বয়ং অরুণ কুমার বিশ্বাস।

ডেকে নিলেন সাতক্ষীরার লেখকদের। সাথে পাঠকরাও। শীত আসছে আসছে সকালে সাতক্ষীরা শহরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টের সুসজ্জিত ক্যাফে রুম ভর্তি লোকে। খবর পেয়ে ছুটে এলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ডেইলি সাতক্ষীরার সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম, শিশুসাহিত্যিক আবুল হোসেন আজাদ, ছড়াশিল্পী আহমেদ সাব্বির, কথাসাহিত্যিক বাবলু ভঞ্জ চৌধুরী, কবি সুলতান মাহমুদ রতন, নুরুজ্জামান সাহেব, স ম তুহিন, কবি ও গীতিকার তৃপ্তি মোহন মল্লিক, কবি ও ছড়াকার বাশার মাহফুজ, কবি সায়েম ফেরদৌস মিতুল, ছড়াকার হিমাদ্রি হাবিব, শেখ আমিনুর রহমান কাজল, এস এম নাজমুল হক (পল্টু), প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি জাহিদা জাহান মৌ, সাংবাদিক এস এম হাবিবুল হাসান, কবি মনিরুজ্জামান মুন্না, সেলিম রায়হান প্রমুখ।

মাসুদ রানা, ফেলুদা, ব্যোমকেশ, দারোগা প্রিয়নাথরা তখন চোখ পিটপিট করে দেখছে তাদের নতুন সতীর্থ অলোকেশ রয়কে।

পাঠ্যাভ্যাস তৈরিতে ডিটেকটিভ গল্পের ভূমিকা নিয়ে শুরু হলো আলোচনা। যত অবক্ষয়, পিতার হাতে সন্তান হত্যা, মায়ের কোলে শিশু হত্যা, আত্মহত্যা–অর্থ্যাৎ প্রবৃত্তির লাগাম না টানতে পারার অন্যতম কারণ বই পড়ার অভ্যেস না তৈরি হওয়া–সুন্দর করে বুঝিয়ে বললেন অরুণ বিশ্বাস। হাফিজুর রহমান মাসুম অত্যন্ত জোরের সাথে বললেন, বিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয়ে ঠিক পাঠের, পাঠ-চর্চার পরিবেশ নেই, সাতক্ষীরার মত জেলা শহরের প্রধান কলেজটিতেও একটি অডিটরিয়াম নেই–আক্ষেপ করলেন তিনি।

যারা শুনছিলেন, তাদের মধ্যে তরুণ লেখক ও লেখক হতে চান–এমন কিছু তরুণ-তরুণীও ছিলেন। লেখককে হাতের কাছে পেয়ে লেখক হওয়ার কলাকৌশল জানতে আগ্রহী হয়ে উঠলেন তারা। টেবিলে সুস্বাদু সালাদ, স্যুপ, ফ্রাই, কোমল পানীয় উপেক্ষা করে তাদের নজর অরুণ কুমারের মুখের দিকে। অরুণ কুমার কিন্তু কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনারের মত ছিলেন না এদিন। পেশায় শূল্ক আমলা তখন গভীর দৃষ্টিপাত করলেন নিজের অন্তরে, সামনে তখন প্রিয় কফি, বললেন, ‘কেউ শেখাতে পারেনা, নিজের কাছ থেকে শিখতে হয়।’

ততক্ষণে ভোমরা বন্দর পরিদর্শনের সময় অনেক গড়িয়ে গেছে। কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার অরুন কুমার বিশ্বাস উঠলেন, সবাইকে অভিভাবদ জানিয়ে সাদা সরকারি গাড়িতে রওয়ানা দিলেন ভোমরার দিকে, আর রেখে গেলেন অলোকেশ রয়কে।