আসাদুজ্জামান: ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর প্রভাবে সাতক্ষীরায় শুক্রবার ভোর থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ বদিউজ্জামান (সার্বিক) জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় জেলার ১৩৭টি আশ্রয় কেন্দ্র ইতিমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ এলাকায় মাংকিং করে সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য জানানো হয়েছে। এছাড়া জেলার প্রতিটি উপজেলায় বেলা ১১ টায় প্রস্তুতি মূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইসাথে উপকূলীয় এলাকার জেলে-বাওয়ালীদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাকেবলায় প্রথমে সন্ধ্যা ৭ টায় প্রস্তুতিমূলক সভা ডাকা হলেও জেলা প্রশাসক ফেসবুক আইডি থেকে প্রস্তুতি সভা আজ বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের গতিমুখ এখন সুন্দরবনের দিকে। সোয়াশ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঝড়টি।
শনিবার বিকালের পর বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ের প্রভাব অনুভূত হতে পারে। আর খুলনা অঞ্চল দিয়ে মধ্যরাতে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বুলবুল।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এটি আরও শক্তি জুগিয়ে শুক্রবার সকালে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এতে সংকেত বাড়িয়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ অধিকাংশ এলাকায় মেঘলা আবহাওয়া বিরাজ করছে। কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ির বৃষ্টিও হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গর ও জেটিতে দুপুর পর্যন্ত পণ্য খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও সংকেত বাড়লে নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ বন্ধ করে হবে। বন্দর সচিব ওমর ফারুক এমন তথ্যই দিয়েছেন।
শুক্রবার বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল বুলবুল।
বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর বলছে, ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।
তবে ভারতের আবহাওয়া অফিস সকাল সাড়ে ৮টার বুলেটিনে বলেছে, তখন বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।