নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে সাতক্ষীরায় চলছে বিরতিহীন বৃষ্টি। আর চলছে দমকা হাওয়া। থেমে থেমে এই হাওয়া ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর থেকে জনমনে আতঙ্ক বেড়েছে। সুন্দরবন এলাকার নদনদীতে বাড়ছে পানি। জেলার ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরে নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি।জেলা প্রশাসন জানিয়েছে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে গ্রামবাসীকে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। সুন্দরবন এলাকা থেকে জেলে, বাওয়ালি ও শ্রমিকদের নিরাপদে ফিরে আসার আহবান জানানো হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন গাবুরা থেকে গ্রামবাসী আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তিনি জানান, সেখানকার কমপক্ষে ২৫ হাজার লোককে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হলেও তাদের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুরের পর থেকে তারা বাড়ি ছাড়তে রাজী হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বহু সংখ্যক নৌযান নিয়ে প্রশাসন পুলিশ বিজিবি বনবিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবকবাহিনী নদীতে অপেক্ষমান রয়েছে। যেকোনো আঘাত এলেই তাদেরকে সরিয়ে শ্যামনগরে নিয়ে আসা হবে। তিনি জানান এরই মধ্যে বিপুল সংখ্যক গ্রামবাসী আশ্রয় শিবিরে উঠেছেন। একই উপজেলার পদ্মপুকুরের জনগনের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। তাদেরকে সেখানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।’
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মীর আলিফ রেজা জানান, ১০৭ টি আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন সরিয়ে আনা হয়েছে। দুর্যোগ কবলিত মানুষ উদ্ধারে পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, রেডক্রিসেন্ট, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরাও এরই মধ্যে শ্যামনগরে পৌছে গেছে।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘জেলার তিনটি উপজেলা শ্যামনগর আশাশুনি ও কালিগঞ্জে ২৭০ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ১২৫২ টি স্কুল কলেজ মাদ্রাসা উন্মুক্ত করে রাখা হয়েছে। তিনি জানান দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান চাল, শুকনো খাবার , বিশুদ্ধ পানি, ওষুধপত্র মজুদ রাখা হয়েছে। মেডিকেল টিম, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী এবং নৌ ও জলযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
জেলার সব স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাঁদেরকে কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।