বিদেশের খবর: মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে জড়িত থাকার অপরাধে দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ কয়েকজন সামরিক নেতার বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনায় মামলা করেছে রোহিঙ্গা ও লাতিন আমেরিকান মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এই প্রথম শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সু চির বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও মামলা হলো।২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ। ১১ নভেম্বর সোমবার মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়নকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে বিচার চায় আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। নিধনযজ্ঞ পেরিয়ে যাওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর প্রথমবারের মতো কোনও দেশ এমন পদক্ষেপ নেয়। এরপর একে স্বাগত জানায় কানাডাও। তবে আর্জেন্টিনার আইনে গণহত্যা বিষয়ক কোনও ফৌজদারি আইন না থাকায় গণহত্যা মামলা করা যায়নি।
‘ইউনিভার্স জুরিসডিকশন’ বা ‘বৈশ্বিক বিচার দায়বদ্ধতার’ আওতায় আর্জেন্টিনায় মামলাটি করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধ বেশি ভয়াবহ হলে যেকোনও দেশেই তার বিচার হতে পারে এমন ধারণা থেকে এই আইন করা হয়েছিলো। এর আগে আর্জেন্টিনার আদালতে স্প্যানিশ স্বৈরশাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো ও চীনের ফালুন গং আন্দোলনের বিচার হয়েছিলো এই আইনের আওতায়।
আইনজীবী টমাস ওজিয়া বলেন, অভিযোগে অপরাধী, সহযোগী ও তথ্য গোপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। আমরা আর্জেন্টিনার মাধ্যমে এটা করছি কারণ অন্য কোথাও এই অভিযোগ করার কোনও সম্ভাবনা নেই।
ওই মামলায় মিয়ানমারের সু চির মতো শীর্ষ রাজনীতিক ও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাংয়ের মতো সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওজিয়া আশা করছেন, এই মামলার পর তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে।
বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে এর প্রেসিডেন্ট তুন খিন বলেন, ‘দিনের পর দিন মিয়ানমার সরকার আমাদের উৎখাতে চেষ্টা করে গেছে। আমাদের হত্যা করা হয়েছে কিংবা দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’