সাতক্ষীরা

দরগাহপুরের মাজেদের কাছ থেকে সম্পত্তি রক্ষা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

By daily satkhira

November 27, 2019

নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনির দরগাহপুর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের ভূমিদস্যু মাজেদ সরদার কর্তৃক জালিয়াতির মাধ্যমে অসহায় মানুষের রেকর্ডীয় সম্পত্তি দখল ও ইজারাদারদের কাগজপত্র জালিয়াতি করে হারির টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী স্থানীয় এলাকাবাসী। এসময় তাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত রনজিত কুমার সরকার তন্ময় কুমার সরকার। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আমরা উপস্থিত প্রায় ৪০ জনই মৎস্যচাষ এবং কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। রামনগর গ্রামের আদেল উদ্দীনের পুত্র চিহ্নিত ভূমিদস্যু মাজেদ সরদার ও তার ভাই আব্দুল জালাল সরদারের অত্যাচারে আমরা অতীষ্ট হয়ে উঠেছি। অথচ মাজেদ সরদারের এক সময় কিছুই ছিলো না। সে নৌকার মাঝি ছিলো এবং সুন্দরবনে কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহ করতো। মাত্র কয়েক বছরেই তিনি শতাধিক মানুষের রের্কডীয়, পৈত্রিক সম্পত্তি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জবর দখল করে বর্তমানে কয়েক’শ বিঘা সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। সাতমোড়ক, রামনগর ও তকিপুর মৌজায় ৬ একর ৯৭ শতক জমি অত্র এলাকার বিভাপতি ঘোষের রেকর্ডীয় সম্পত্তি ছিলো। তিনি ১৯৭৯ সালে কোলকাতার নিউ ব্র্যাকপুর হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর ভূমিদস্যু আব্দুল মাজেদ সরদার ১৯৮৭ ভূয়া দলিল সৃষ্টি করে ওই সম্পত্তি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজে ভোগ দখল করে আসছেন। অথচ রামনগর মৌজায় ৯৮ শতক ভিপি সম্পত্তি সরকারের কাছ থেকে আমরা ইজারা নিয়ে মৎস্য ব্যবসায়ী খায়রুল মোজাফফার মন্টুর কাছে হারি দিয়ে আসছিলাম। আমরা দর্ঘীদিন হারির টাকাও উত্তোলন করেছি। সম্প্রতি হারির টাকা উত্তোলন করতে গেলে তার ম্যানেজার জানান হারির টাকা মাজেদের কন্যা সেলিনা খাতুন উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন। এরপর আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ওই ভূমিদস্যু মাজেদ আমাদের ইজারা নেওয়া সম্পত্তির কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করে তাদের সম্পত্তি দাবি করে উক্ত হারির টাকা উত্তোলন করেছেন। অথচ উক্ত সম্পত্তি ১৯৬৯ সাল হতে বাং ১৪২৬ সাল পর্যন্ত নবায়ন করা হয়নি মর্মে নিরাপদ সানা ও বাবু লাল সানাসহ কয়েকজনের কাছে বতর্মান আশাশুনি সহকারী কমিশার (ভূমি) দ্রুত তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বকেয়াসহ নবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এসব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আদালতে কমপক্ষে ৪০টি মামলা চলমান রয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে মাজেদ সরদার দিনের পর দিন মামলাগুলো ঝুলিয়ে রেখেছেন। এছাড়া অত্র এলাকার সরকারি খাস খালে অবৈধভাবে বেঁড়ীবাধ দিয়ে হাজার হাজার বিঘা চিংড়ী চাষীদের মারাত্মকভাবে ক্ষতি করে যাচ্ছেন। এবিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। উক্ত চিংড়ী চাষীরা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেও লাভের মুখ দেখতে না পেরে হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। জালজালিয়াতির মাধ্যমে ভুমি দস্যু মাজেদ বর্তমানে সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে প্রচুর সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তার অত্যাচারে এলাকার বহু অসহায় মানুষ বর্তমানে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ভূমিদস্যু মাজেদ সরদারের কাছ থেকে তাদের সম্পত্তি রক্ষা ও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।