তালা

তালায় পুলিশ পাহারায় বিরোধপূর্ণ জমি দখল করিয়ে দেবার চেষ্টা, পুলিশের হামলায় দু’ নারী আহত

By Daily Satkhira

April 04, 2017

তালা প্রতিনিধি : তালা থানার ওসি (তদন্ত) মো. মনজুরুল হাসান মাসুদ ও এএসআই মদন বিরোধপূর্ন জমি অন্যপক্ষকে দখল করিয়ে দেবার চেষ্টা চালিয়েছে। বিরোধপূর্ন ওই জমি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা বিচারাধিন রয়েছে। জমি দখল করার চেষ্টাকালে পুলিশ দুই নারীকে পিটিয়ে আহত করেছে। এছাড়া প্রতিপক্ষ আনোয়ারা বেগম ও তার ভাড়াটিয় দূর্বৃতক্তরা লুটপাট এবং গাছ কেটে সাবাড় করেছে। সোমবার বিকালে তালা ডাকবাংলা সভাকক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপজেলার শাহাপুর গ্রামের মো. এনায়েত আলী গাজী এই অভিযোগ করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে এনায়েত আলী গাজী বলেন, মাঝিয়াড়া মৌজার, এসএ ৩২১ নং খতিয়ানের ১২৭৭ দাগের ১১ শতক জমি তিনি বিগত ২৫.০৯.১৯৮৯ ইং তারিখে ইসলামকাটী সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের ৪৮০৪ নং দলিলমূলে নবেজান বিবির কাছ থেকে ক্রয় করেন। সেই থেকে অদ্যাবদি উক্ত জমির নামপত্তন সম্পন্নসহ সরকার বাহাদুরকে খাজনা প্রদান করে শান্তিপূর্ণ ভোগ দখলে আছেন। কিন্তু উক্ত জমির মধ্যে ৯ শতক জমি জোরপূর্বক দখল করার জন্য শাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা রমজান আলী খাঁ ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এঘটনায় এনায়েত আলী গাজী সাতীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় একটি মামলা (পি. ১১১/১৭) দায়ের করেন। এতে বিজ্ঞ আদালত তালা থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল এবং আইনশৃঙ্খলা রার আদেশ দেন। পরে তালা থানার এএসআই শফিউজ্জামান মোহন’র তদন্ত মোতাবেক ওসি মো. হাসান হাফিজুর রহমান তাঁর থানার ২৯৭ নং স্মারকে ২১/০২/১৭ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। রিপোর্টে উক্ত জমি ৩০/৩৫ বছর ধরে এনায়েত আলী গাজীর দখলে এবং নালিশি সম্পত্তিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। উক্ত পিটিশন মামলাটির বিচারকার্য্য বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে এবং আগামী ২৬/০৪/১৭ ইং তারিখে শুনানীর জন্য ধার্য্যদিন রয়েছে। অথচ এই একই জমি রমজান আলী খাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ৬ বছর পূর্বে ক্রয় করার দাবী করে জমি দখলের জন্য পায়তারা শুরু করে। একপর্যায়ে আনোয়ারা বেগম ২৫/০৯/১৪ তারিখে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জর্জ আদালতÑ সাতীরায় সিভিল মামলা (২৮/১৪) এবং গত ২৫/০১/১৭ ইং তারিখে আরো একটি পিটিশন মামলা (পিÑ২০০) দায়ের করেন। পিটিশন মামলায় তালা থানার ওসি (তদন্ত) মো. মনজুরুল হাসান মাসুদ অবৈধ অর্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এক পীয় তদন্ত করে উক্ত জমি আনোয়ারা বেগম’র দখল রয়েছে মর্মে ভূয়া, মিথ্যা ও তঞ্চকী রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন। এই ঘটনায় বিজ্ঞ আদালত জমি দখলকারীর দখলে বজায় থকাবে বলে নির্দেশ দেন। কিন্তু নালিশী জমি অদ্যবদী এনায়েত আলী গাজী’র দখলে রয়েছে। যেকারনে তাকে উচ্ছেদ করে উক্ত জমি প্রতিপ আনোয়ারা বেগমকে দখল করে দেবার জন্য তালা থানার ওসি (তদন্ত) মনজুরুল হাসান মাসুদ সোমবার সকাল ১০টার দিকে জমিতে যায়। এসময় তালা থানার এএসআই মদন ও ওসি (তদন্ত) মনজরুল হাসান মাসুদ এর উপস্থিতিতে আনোয়ারা বেগম এবং তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা জমির উপর থেকে গাছাপালা কেটে সাবাড় করতে থাকে এবং জমিতে খুটি পূঁতে ঘর বাঁধার চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দিতে গেলে ওসি (তদন্ত) এনায়েতের মেয়ে রুমি খাতুন এবং বোন রহিমা খাতুনকে লাঞ্চিত সহ পিটিয়ে আহত করে এবং জমির দখল ছেড়ে দিতে নানাবিধ হুমকি-ধামকি প্রদান করে। এছাড়া তাদের ঘরের দরজা ও আসবাবপত্র ভাংচুর সহ মালামাল লুট করে। এনায়েত আলী গাজী আরো জানান, আহত নারীদের তালা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তালা প্রেস কাব সভাপতি সাংবাদিক এস.এম. নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যেয়ে তান্ডবের চিত্র ধারন করাকালে ওসি (তদন্ত) মনজুরুল হাসান মাসুদ প্রকাশ্যে সাংবাদিকের নামে সহ আমাদের নামে মামলা দায়ের করার জন্য দূর্বৃত্ত আনোয়ারা বেগমকে উস্কানি দেয় বলেও এনায়েত আরী গাজী অভিযোগ করেছেন। এঘটনায় এনায়েত আলী সম্পত্তি রা এবং অবৈধ দখলরোধে উর্দ্ধতন পুলিশ প্রশাসনের সুÑদৃষ্টি কামনা করেছেন। এদিকে এবিষয়ে জানতে চাইলে তালা থানার ওসি মো. হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ দাড়িয়ে থেকে জমি দখল করিয়ে দেবার চেষ্টা করেছে- এমন অভিযোগ সঠিক নয়। উক্ত জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধকে কেন্দ্র করে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যা করণীয় পুলিশ তাই করেছে।