নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা শহরের প্রাণ সায়র খাল পুনঃখননে জেলা প্রশাসন গঠিত তদরকি কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বেই খাল খনন কাজ পুনরায় শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে নাগরিকদের প্রতিবাদের মুখে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর নির্দেশে খনন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সাথে কননকৃত অংশের পানি সেচ দিয়ে তলদেশ শুকিয়ে ফেলা এবং খননকৃত মাটি দুই পাড় থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে সরিয়ে নেয়ার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরার নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে এ কাজ বন্ধ করা হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরা প্রাণ সায়র খাল পুনঃখননের শুরুতেই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল সংবাদ সম্মেলন করে একটি তদারকি কমিটি গঠন করেন। জেলা প্রশাসক জানান, তদারকি কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রাক্কলেেনর মাপ-জরিপ সরেজমিনে দেখে প্রতিবেদন দাখিলের আগ পর্যন্ত পুনঃখনন কাজ বন্ধ থাকবে। কিন্তু রোববার সাতক্ষীরা পৌর সভার ৬ নং ওয়ার্ডের কুখরালী আমতলা এলাকায় যেনতেনভাবে খালের কর্দমাক্ত মাটি দুই পাড়ে স্তুপ আকারে ঝাপ করে খাল খনন দেখিয়ে পানি উঠানো হলে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে নাগরিক নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি জানানো হয়। নাগরিক নেতৃবৃন্দ সরেজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র প্রকৌশলীকে জানান এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে প্রচার করেন। বিষয়টি নিয়ে মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হলে নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। সময় পাউবো-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুনঃখনন কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
এবিষয়ে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরার সভাপতি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করে খাল খনন করা হচ্ছে এবং সেখানে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে- এমনটি জানতে পেরে আমরা সেখানে উপস্থিত হই। এসময় সেখানে খাল সঠিকভাবে খনন করা হচ্ছিল না এবং খালের নরম মাটি কেটে দুই পাড়ে উচুঁ করে রাখা ছিল। কোন কোন স্থানে তা সাথে সাথে ধ্বসে পড়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, এঘটনায় জেলা প্রশাসক যে তদারকি কমিটি গঠন করেছেন সেটিকে উপক্ষো করে ঠিকাদারের খনন কাজ চালিয়ে যাওয়া অস্বাধু তৎপরতা এবং বড় রকমের দুর্নীতির চেষ্টা। এখন জেলা প্রশাসনের উচিত হবে এই ধৃষ্টতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কিভাবে হলো তা খতিয়ে দেখা।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমাদের নিষেধ না মেনে ঠিকাদার যে কাজ করেছে তা বন্ধ করা হয়েছে এবং পানি সেচ দিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। আগামিকাল (সোমবার) সকাল ১০ টায় তদারকি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর জেলা প্রশাসককে অবহিত করে পুনরায় খনন কাজ শুরু হবে।