তরিকুল ইসলাম লাভলু, নলতা : সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নলতা হাই স্কুলের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান আজ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ও আগামী শুক্রবার বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে আয়োজক কমিটি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ডা.আ ফ ম রুহুল হক এমপি। কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা গ্রামের জমিদার বাবু ভঞ্জ চৌধুরী ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু করেন। পরে অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক, শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহছানউল্লা (রহ.) এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ সহ বহু উন্নতি সাধিত হয়। পীর কেবলার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯১৯ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিদ্যালয় স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯১৭ সাল থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত প্রধান শিকের দায়িত্ব পালন করেন বিখ্যাত শিাবিদ বাবু জ্ঞানেদ্রনাথ চক্রবর্তী। এছাড়া ১৯৪৩ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল বাবু বিজয় নাথ মুখার্জি, ০১-০১-১৯৪৬ সাল থেকে ৩০-০১-১৯৪৯ সাল বাবু তারাপদ মুখার্জি, ৩০-০১-১৯৪৯ সাল থেকে১৫-০৮-১৯৪৯ সাল মো. মাহাবুবুর রহমান, ১৬-০৮-১৯৪৯ সাল থেকে ২৬-০২-১৯৫০ সাল (ভারপ্রাপ্ত)মো. জনাব আলী, ২৭-০২-১৯৫০ সাল থেকে ২২-০৭-১৯৫০ সাল মো. আব্দুল হাই, প্রধান শিক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। দেশ বিভাগের পর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন আলহাজ্জ দরবেশ আলী। ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত আলহাজ্জ দরবেশ আলী অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তার প্রচেষ্টায় শিা প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। তার কঠোর পরিশ্রম, নিবিড় পরিচর্যা ও সঠিক পাঠদানের ফলে ১৯৭৬ সালে অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ডা. আবুল কালাম আজাদ সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করা (বর্তমানে ঢাকা ক্যান্সার হাসপাতালের ডিডি হিসেবে কর্মরত আছেন) সহ সে সময় ছাত্র/ছাত্রীরা অভূতপূর্ব ও ঈর্ষনীয় ফলাফল অর্জন করতে সম হয়। উক্ত স্কুলের অনেক ছাত্র/ছাত্রী বর্তমানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হয়ে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছেন। ২ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান সূচী হল, আজ ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় রেজিস্ট্রেশন কিটস বিতরণ, সন্ধ্যা ৭ থেকে সাড়ে ৯টা মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, রাত ৯টা থেকে ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আগামী কাল ২য় দিন ৭ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৮ টায় সকলের উপস্থিতিতে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন, ৮টা১০ মিনিটে র্যালী, ৯টা৪৫ মিনিটে অতিথিদের আসন গ্রহণ, স্বাগত ভাষণ, শোক প্রস্তাব ও নীরবতা পালন, আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, বর্তমান শিক্ষার্থীদের থেকে বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, বিশেষ অতিথির বক্তব্য, প্রধান অতিথির বক্তব্য ও স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন, সভাপতির ভাষণ। দুপুর ১২ টায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, সাড়ে ১২টা ৩০ মিনিট থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নামাজ ও দুপুরের খাওয়ার বিরতি। বিকাল সাড়ে ৫ টায় প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রীদের বক্তব্য, খেলাধুলা অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র, সন্ধ্যা ৭ টায় ভিডিও প্রদর্শনী, ৭.১৫ মিনিটে ক্রেস্ট ও পুরস্কার বিতরণ , রাত ৮টায় আলোক উৎসব, সাড়ে ৮টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রাত ১০ টায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সমাপ্তি।