ফিচার

শ্যামনগরের আকাশলীনায় দশনার্থীদের জন্য গড়ে উঠেছে মৎস্য জাদুঘর

By Daily Satkhira

April 05, 2017

গাজী আল ইমরান, শ্যামনগর : বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা শ্যামনগর। আর সাথে সাথে এ উপজেলার একেবারেই কোল ঘেষে বিশ্বের সর্ববৃহৎ নিরবচ্ছিন্ন ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। আর সুন্দরবনের অপরুপ সুন্দরের আলোয় আলোকিত হয়ে এ বনের পাদদেশে উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে গড়ে উঠেছে আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম। মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা এ পর্যটন কেন্দ্রটি মন কেড়েছে অসংখ্য পর্যটকের।ছুটির দিনে উপজেলার পর্যটকদের ব্যপক আগমনে পরিপূর্ণ যৌবন ফিরে পায় আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার। দর্শনার্থীদের জন্য শুধু মাত্র সুন্দরবন দেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি এখানকার কর্তৃপক্ষ। তৈরি করা হয়েছে মোঃ আব্দুস সামাদ ফিস মিউজিয়াম। মানব সৃষ্ট পরিবেশ দূষণের কারণে দ্রত জলবায়ুর পরিবর্তন এবং মাছের  আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে দিন দিন মাছ বিলুপ্তের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে আমাদের নতুন প্রজন্ম আমাদের ওই সব সংস্কৃতির নিদর্শন দেখতে পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে। বিলুপ্ত এবং বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলে বাস করা বিভিন্ন জলজ প্রাণীর সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতেই এই ব্যতিক্রম ধরনের জাদুঘর গড়ে তুলেছে উপজেলা প্রশাসন। জাদুঘরটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পর্যটকদের সুন্দরবন অঞ্চল অর্থাৎ উপকূলীয় অঞ্চলের মাছের সাথে পরিচয় ঘটাতে তৈরি করা হয়েছে। জাদুঘরটি শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলমের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠা, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক হোসেনের তত্বাবধায়নে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নির্মিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক

হোসেন বলেন, “জাদুঘরটিতে রয়েছে জলের রাজ্যে বিচরণ করা চুনোপুটি থেকে শুরু করে ১০২ প্রকার আধা লবণ এবং সামুদ্রিক মাছ। যেগুলো মেডিসিনের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আঞ্চলিক নামের সাথে সাথে মাছের বৈজ্ঞানিক নামসহ সকল প্রকারের বর্ণনা দেয়া আছে যাতে করে দর্শনার্থীরা ওই  মাছ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন।” আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম সেন্টারে প্রবেশ করে ১০০ ফুট ভিতরে গিয়ে ডান ধারের বাশের ট্রায়েল ধরে সামনে গিয়েই নদীর উপরে মনোরম পরিবেশে নির্মিত আব্দুস সামাদ ফিস মিউজিয়ামটি দেখতে পাবেন। ভিতরে প্রবেশ করে  দেখতে পাবেন কই, তপসে, ছরি মাছ, রিফশার্ক, অক্টোপাস, শাপলা পাটা, হাড় কাকড়াবাগদা, লটিয়া চান্দা, বেলে, খলসে, ভেটকি, পারশে, খরসুলা, খলিসার মত বাজারে কম চোখে পড়া নানা প্রজাতির মাছ দেখতে পারবেন। জানতে পারবেন এদের আবাসস্থল ও ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যসমূহ। চোখে পড়বে মাছ ধরার কাজে ব্যবহƒত বাঁশ বেতের তৈরি খেয়া নৌকা, মাছ ধরার বিভিন্ন রকমের জাল, পলো, বাঁশের তৈরি মাছ রাখার বিভিন্ন ধরনের উপকরণ। পরিবেশ দেখে মনে হবে যেন কোনো জেলের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন।সাথে সাথে সুন্দরবনের আদলে বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যমে ছোট্র পরিসরে তৈরি করেছে সুন্দরবন, যার মাধ্যমে মানুষ সুন্দরবন সর্ম্পকে সবকিছু জানতে বা বুঝতে পারবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন সাগর বলেন“ আরোও বড় পরিসরে এটিকে সম্প্রসারণের কাজ হাতে নেয়া হবে। আশা করছি অল্প কিছু দিনের মধ্যে আমরা উপকূলীয় অঞ্চলের আরো বিভিন্ন  প্রজাতির মাছ দর্শনার্থীদের দেখাতে পারব।”