আজকের সেরা

সাতক্ষীরায় নারীর সাথে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইলিংয়ের ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেট!

By Daily Satkhira

December 18, 2019

অনলাইন ডেস্ক: সাতক্ষীরায় এক ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়া গেছে!যারা সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি গোপন ভিডিও ধারণ করে তাদেরকে ব্লাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে চাঁদা আদায় ও অনৈতিক সুবিধা নেয়ার এক ভংঙ্কর চক্র গড়ে তুলেছিল। এই চক্রের অন্যতম হোতা সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক। সাদিকের শীর্ষ সহযোগীদের মধ্যে সাইফুল ও দীপ সম্প্রতি ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। সাদিক-আকাশ সিন্ডিকেটের জালে জড়িয়েছে শতাধিক ব্যক্তি। প্রতারণার জাল ফেলে বিভিন্ন পেশার মানুষকে বাগে এনে নারীর সাথে মেলামেশার নগ্ন ভিডিও ধারণ চক্রের সাথে সাতক্ষীরার বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিক ও তাদের ক্যামেরাম্যানদের নাম আসতে শুরু করেছে। আর এই চক্রের শিকারে পরিণত হয়েছেন প্রভাবশালী রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। আর একবার যার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে, তাকে জিম্মি করে ইচ্ছে-খুশি অর্থ আদায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে কাজ আদায়সহ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অনেকে এই অনৈতিক কাজের বিষয়ে পূর্ব থেকে কমবেশী অবগত থাকলেও এই চক্রের সাথে থাকা সাংবাদিক সিন্ডিকেটের কারণে মুখ খুলতে পারেনি। এমনকি সাংবাদিকরাও মুখ খুলতে পারেননি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে উঠা সাংবাদিকদের পাল্টা গ্রুপের চরিত্রহননমূলক অতৎপরতার কারণে। গত ১৫ ডিসেম্বর উক্ত চক্রের এক সদস্য জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকাশ ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। আকাশ ‘আমারএমপিডটকম’-এ সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদের এ্যাম্বাসেডর। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলারই বাদি দুইজন ইউপি চেয়ারম্যান। মামলার এজাহারে অপর আসামিদের বিস্তারিত পরিচয় দেওয়া না হলেও তাদের ২ জন সাংবাদিক বলে জানা গেছে। আর এদের সিন্ডিকেট প্রধান জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক। এই সিন্ডিকেটের উপরে আরো উচ্চ পর্যায়ের লোকজন থাকতে পারেন বলে শহরে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানায় দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আকাশ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে এবং তার সিন্ডিকেটের আরো একাধিক সদস্যের নাম প্রকাশ করেছে। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ বিস্তারিত কিছু জানায়নি। এদিকে সাতক্ষীরা থানায় দায়ের করা ২৮ নং মামলার এজাহারে (সামাজিক কারণে সংবাদে বাদির নাম গোপন রাখা হলো) ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, উক্ত আসামিরা বাদির নিকট বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করে আসছিল। কিন্তু বাদি প্রাথমিক পর্যায়ে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বিভিন্ন কায়দায় তাকে ব্লাকমেইলের চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে একজন অপরিচিত মহিলা বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে প্রেমের অভিনয় করতে থাকে। সে জানায় তার কাছে বাদির বেশকিছু অশ্লিল ভিডিও রেকর্ড রয়েছে। বাদি তাকে ২০ লাখ টাকা না দিলে উক্ত অশ্লীল ভিডিও ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আসামিদের টাকা না দিলে তারা বাদির ছবি ব্যবহার করে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে। তখন বাদি তার সামাজিক মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টার সময় সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলে চায়না বাংলার সামনে আসামিদের ৫ লাখ টাকা প্রদান করে। আসামীরা বাদির সামনে উক্ত ভিডিও মুছে ফেললেও পরে তারা আবার জানায় তাদের কাছে ঐ ভিডিও এর কপি রয়েছে। বাকি ১৫ লাখ টাকা না দিলে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে এবং কারণে অকারণে বাদিকে হয়রানী করতে থাকে। বাদি তার এজাহারে আরো উল্লেখ করেছেন, উক্ত আসামিরা জেলার শিল্পপতি, চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বিভিন্ন সময়ে সুকৌশলে ব্লাকমেইল করে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আকাশ ও সাদিক ছাড়াও এই মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন তুহিন, সাংবাদিক মনি ও সোহরাব হোসেন। এদের মধ্যে তুহিন ও সাংবাদিক মনির পিতার নাম ও ঠিকানা অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে।