আশাশুনি প্রতিনিধি ॥ রাজাকারের তালিকায় দুই হিন্দু ব্রাহ্মণ, এক মুক্তিযোদ্ধার বাবা ও তিন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তর্ভূক্ত হওয়ার প্রতিকারের দাবীতে আশাশুনি প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়েছে। বুধবার সকালে এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তালিকায় অন্তরভূক্ত ব্যক্তিদের সন্তানেরা এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। লিখিত বক্তব্যে খাজরা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এবাদুল মোল্যাসহ ৬ মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় ঘোষিত রাজাকারের তালিকায় গদাইপুর গ্রামের ফয়জুদ্দীন সরদারের পুত্র মোজাহার সরদার, তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের সতিন্দ্র নাথ মূখার্জীর পুত্র প্রয়াত স্কুল শিক্ষক সুবোধ মূখার্জী, অক্ষয় মূখার্জীর পুত্র জিতেন্দ্র নাথ মুখার্জী, গদাইপুর গ্রামের সৈয়দ আলী সরদারের দুই পুত্র জিয়াদ সরদার ও মিয়ারাজ আলী সরদারের নাম অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। অথচ মোজাহার সরদার ছিলেন একজন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধ চলাকালীন তিনি বিভিন্ন সময় তাদের প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করেছেন। তাকে আসামী করে মৃত নওশের আলী সরদারের পুত্র নাজিম উদ্দীন সাতক্ষীরা আদালতে সিআরপি- ১৫১/২০০৯ নং একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতের বিচারে মোজাহার সরদার নির্দোষ প্রমানিত হলে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সেক্টর কমান্ডার রহমাতুল্লাহ দাদু ভাই মোজাহার সরদারকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা এবং তিনি তার সাথে তিনমাস ছিলেন উল্লেখ করে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা ইউনিট কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু, আশাশুনি উপজেলা সাবেক কমান্ডার আব্দুল হান্নান এবং আব্দুর রহমান, যুদ্ধকালীন কমা-ার কাজলনগর ক্যাম্প ইনচার্জ এসএম আব্দুল বারী, খাজরা ইউনিয়ন কমান্ডার এবাদুল মোল্যাসহ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা মোজাহার সরদারকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বলে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। মোজাহার সরদারের পুত্র শাহ নেওয়াজ ডালিম নৌকার প্রতীক নিয়ে একাধিকবার চেয়ারম্যান, তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগ সভাপতি ও আহবায়ক, উপজেলা আ’লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন। তার সুখ্যাতিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রীমহল ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। যারই ধারাবাহিকতা তার পিতাকে রাজাকারের তালিকাভুক্ত করতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাম অন্তর্ভূক্ত করান। সবোধ মুখার্জী, জিতেন্দ্র মুখার্জী মুক্তিযুদ্ধ শুরু সময় ভারতে যান এবং স্বাধীনতা অর্জিত হলে দেশে ফেরেন। জিয়াদ সরদার, মিয়ারাজ সরদার সহযোগি মুক্তিযোদ্ধা এবং জিয়াদ আলি ভাতাভোগি মুক্তিযোদ্ধার পিতা। ভুলবশত: রাজাকারের তালিকাভূক্ত হওয়া উপরোক্ত পাঁচজনের নাম তালিকা থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়সহ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ডলিম, মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী, দীনেশ চন্দ্র ম-ল, আব্দুল কুদ্দুস, শিক্ষক অনল মূখার্জী, মিহির মূখার্জীসহ এলাকার মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের পরে তারা একই দাবীতে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি স্বারকলিপি প্রদান করেন।