আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরায় বাবার বন্ধু পরিচয়দাতা একজনসহ চার লম্পটের গনধর্ষনের শিকার হয়েছে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী। শনিবার মধ্যরাতে তাকে শহরের অদুরে এল্লারচর এলাকা থেকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। এ সময় স্থানীয় জনতা দুই ধর্ষককে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। পালিয়ে গেছে আরও দুইজন।
সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল কাদের জানান, রাত ১২ টার দিকে মেয়েটিকে ফিংড়ি ইউনিয়নের এল্লারচর গ্রামের ডালিয়া বেগমের বাড়ির উঠান থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। রাতেই তার ডাক্তারি পরিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার বিবরন দিয়ে উপ-পরিদর্শক আবদুল কাদের আরো জানান, মেয়েটির বাড়ি আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামে। পার্শ্ববর্তী কয়রা উপজেলার কালনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে সে। মেয়েটিকে তার বাবার বন্ধু সোহরাব হোসেন চেতনা নাশক অথবা মাদক জাতীয় কিছু খাইয়ে শনিবার রাতে বাড়ি থেকে কৌশলে তুলে নিয়ে আসে। পরে অজ্ঞাত স্থানে বাবার কথিত বন্ধু সোহরাব হোসেন , তার সহযোগী এল্লারচর গ্রামের মাহফুজুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, বালিথা গ্রামের হাসেম আলির ছেলে নুর হক এবং একই গ্রামের ওয়াহেদ আলির ছেলে ওবায়দুল ইসলাম মেয়েটিকে উপর্যুপরি ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে তারা অসুস্থ মেয়েটিকে এল্লারচর গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ডালিয়া বেগমের বাড়িতে নিয়ে আসে । এ সময় গ্রামবাসী তাদের ধাওয়া দিলে দুই ধর্ষক সোহরাব ও বাবু হাতেনাতে ধরা পড়ে। পালিয়ে যায় অপর দুই ধর্ষক নুর হক ও ওবায়দুল ইসলাম। পুলিশ ডালিয়া বেগম ও লিলি খাতুন নামের দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা জানান, মেয়েটির ডাক্তারি পরিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সে এখন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি জানান এ ব্যাপরে একটি মামলা হয়েছে । তাতে চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে এ ঘটনার সূত্র ধরে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, সোহরাব হোসেন তার ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের শওকত সানার ছেলে। এলাকায় একজন লম্পট হিসাবে পরিচিত সোহরাব হোসেন। ধর্ষিতা মেয়েটির বাবা আমিনুল ইসলামের সাথে সোহরাব বন্ধু পাতিয়ে তার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত করে আসছেন । এই সুযোগে সে তার বন্ধুর স্ত্রী আসমা খাতুনের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। চেয়ারম্যান জানান বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ পাবার পর তদন্ত করে উভয়পক্ষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এই সোহরাব শেষ পর্যন্ত তার কথিত ব›ন্ধু স্কুল পড়–য়া মেয়েকে তুলে এনে সহযোগীদের নিয়ে ধর্ষন করেছে। তিনি এর বিচার দাবি করেন। একই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আসলাম হোসেন জানান, ধর্ষক সোহরাব একজন ঘের ব্যবসায়ী। সাতক্ষীরা শহরের মনজিতপুরে তার চারতলা বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িতে প্রায়ই সে বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের ফুসলিয়ে নিয়ে আসে বলে তার কাছে অভিযোগ রয়েছে।