রাজনীতি

দেবর-ভাবির দ্বন্দ্ব নিরসন; রওশন আমৃত্যু ‘চিফ প্যাট্রন’, সব ক্ষমতা কাদেরের

By Daily Satkhira

December 27, 2019

দেশের খবর: জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদ দেওয়া হচ্ছে। দলের মহাসচিব জানান, রওশন এরশাদ যত দিন জীবিত থাকবেন তত দিন তিনি ‘চিফ প্যাট্রন’ বা প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদে থাকবেন।

আজ শুক্রবার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের বৈঠক শেষে মহাসচিব মসিউর রহমান (রাঙ্গা) সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

আগামীকাল জাতীয় পার্টির নবম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানকার পরিবর্তন প্রসঙ্গে মসিউর রহমান বলেন, ‘এবারের মূল পরিবর্তন হচ্ছে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী রওশন এরশাদ চিফ প্যাট্রন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দলে ওনার সম্মান থাকবে সর্বোচ্চ। মিটিং বা সাধারণ সভা- সবখানেই ওনার এই সর্বোচ্চ সম্মানটা থাকবে।’ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জানান, দলের চেয়ারম্যানও জানিয়েছেন সবক্ষেত্রেই রওশন এরশাদের অবস্থান দলের চেয়ারম্যানের ঊর্ধ্বে থাকবে।

মসিউর রহমান বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কাছে দলের সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকবে। যত মিটিং হবে, তা তিনি প্রিসাইড করবেন। তবে যেহেতু হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী এখনো জীবিত, তাই তিনি যত দিন জীবিত রয়েছেন, তিনি চিফ প্যাট্রন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’

জাতীয় পার্টির কোনো সিদ্ধান্ত এখন এককভাবে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে মহাসচিব বলেন, ‘একক সিদ্ধান্তে দল চলে না। এখন থেকে দলের সিদ্ধান্ত এককভাবে কেউ দেবে না। দলের প্রেসিডিয়াম ও দলের কো চেয়ারম্যান যারা আছেন, সবাই মিলে দলের সিদ্ধান্ত দেবেন। চেয়ারম্যানও এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে চান না।’

রওশন এরশাদের নতুন পদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরও বাড়াবে কি না জানতে চাইলে মসিউর বলেন, এটা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। চিফ প্যাট্রন, চেয়ারম্যান ও মহাসচিব মিলে যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/ক উপধারায় দলের চেয়ারম্যানকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করা হয়েছে। তবে নবম কাউন্সিলে সেই ধারা বাতিল বা সংশোধন হচ্ছে না বলে জানান জাপা মহাসচিব। পার্টির গঠনতন্ত্রে আরও অনেক ধারায় পরিবর্তন আসতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রেসিডিয়ামের সভায় দলের নেতারা পরিবর্তনের দাবি এনেছেন। চেয়ারম্যানকে পরিবর্তন, সংযোজন, পরিবর্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । এ ছাড়া জানান, জাতীয় পার্টিতে প্রেসিডিয়াম সদস্য সংখ্যা ৪১ রয়েছে। তবে তা কমিয়ে আনা হতে পারে এবং কাউন্সিলে চার-পাঁচ জনকে দলের সিনিয়র কো চেয়ারম্যান ও কো চেয়ারম্যানের পদে আনা হতে পারে। জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকটি সহযোগী সংগঠন কাউন্সিলে অঙ্গ সংগঠনের স্বীকৃতি পাবে বলেও জানান জাপা মহাসচিব।

২০১৬ সালে মার্চে জাপার অষ্টম কাউন্সিলে দলটির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাঁর ভাই জি এম কাদেরকে কো চেয়ারম্যানের পদে বসান। পরে রওশনের জন্য সিনিয়র কো চেয়ারম্যান পদ তৈরি করেন এরশাদ। এ বছরের মে মাসে এরশাদ জিএম কাদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। এরপর থেকে দেবর-ভাবির দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।