রাজনীতির খবর: বছর চারেক আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা ধারণা দিয়েছিলেন যে, মন্ত্রী সভার সদস্যদের খুব বেশি দলীয় পদে রাখা হবে না। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল এবং সরকারের মধ্যে একটি সীমারেখা টানতে চাইছেন তারা। কিন্তু ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের পর গত চার বছরে সেটির প্রতিফলন তেমন একটা দেখা যায়নি। তবে এবার দল ও সরকারের মধ্যে পার্থক্য তৈরির চেষ্টা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন। সর্বশেষ কাউন্সিলে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের ‘সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণের ফোরাম’ প্রেসিডিয়ামের মাত্র একজন সদস্য মন্ত্রীসভায় আছেন। তিনি হচ্ছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। অথচ ২০১৬ সালের কাউন্সিলের পরে অন্তত চারজন প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রীসভায় ছিলেন। কেন্দ্রীয় যে কমিটি তখন হয়েছিল তাতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রীসভার অন্তত আটজন সদস্য ছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালের কমিটিতে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ মন্ত্রীসভায় আছেন পাঁচজন সদস্য। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, যেহেতু রাজনৈতিক দল সরকার পরিচালনা করে, সেজন্য দলকে সরকার থেকে পুরোপুরি আলাদা করা খুব কঠিন কাজ হবে। আওয়ামী লীগের তথ্য এবং গবেষণা সম্পাদক পদে নতুন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. সেলিম মাহমুদ। তিনি বলেন, দলকে সরকার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করা যেমন সম্ভব নয় তেমনি কাঙ্ক্ষিতও নয়। সরকার থেকে দলকে আলাদা করার বিষয়টি যতটুকু যৌক্তিক ততটুকু রাখতে হবে বলে তিনি মনে করেন। “দলের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রী থাকাটাও প্রয়োজন রয়েছে। সরকার জনগণের জন্য যা যা করবে সেটির মূল কমিটমেন্ট দল থেকে আসে। সেজন্য দলের সাথে সরকারের একটা রিলেশনশিপের (সম্পর্ক) প্রয়োজন রয়েছে,” বলছিলেন ড. মাহমুদ। তিনি বলেন, দলের অনেক সাংগঠনিক কাজ থাকে। কিন্তু বেশি মন্ত্রী যদি দলে থাকে এবং তারা যদি দলের কাজে ব্যস্ত থাকেন তাহলে সরকারের কাজ ব্যহত হয়। “দল এবং সরকারের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত তৈরি হয়। সেটাও মাননীয় নেত্রী, আমি যেটা বিশ্বাস করি, একেবারে সবাইকে না সরিয়ে কয়েকজনকে রেখেছেন একেবারে পলিসি লেভেলে যাতে করে দল এবং সরকারের মধ্যে সবসময় একটা সেতুবন্ধন থাকে,” বলেন ড. মাহমুদ।