এইচএসসি ২০১৯ পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে মানবিক বিভাগে প্রথম হয়েছে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ছাত্র শেখ শাকিল হোসেন। গতকাল (রবিবার) যশোর বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা ২০১৯ এর মেধা বৃত্তির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি ইউনিয়নের জোড়দিয়া গ্রামের ছেলে শেখ শাকিল হোসেন। শিক্ষার হাতেখড়ি হয় নানা শেখ সোহরাব হোসেনের হাত ধরে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু হয় স্থানীয় জোড়দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ২০১১ সালে জিপিএ ৫.০০ সহ বৃত্তি পেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ইউনিয়নের প্রথম হয় শাকিল। ২০১৪ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (জেএসসি) স্থানীয় গোবরদাড়ি জোড়দিয়া স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৫.০০ সহ ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৭ সালে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পাশ করে।
মাধ্যমিক পর্যন্ত নিজের গ্রামেই পড়ালেখা করে উচ্চ মাধ্যমিকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়। এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে সর্বোচ্চ ফলাফল করেও মানবিক বিভাগে ভর্তির কারণ জানতে চাইলে শাকিল বলেন, “কাউকে না জানিয়েই বিভাগ পরিবর্তন করেছিলাম শুধুমাত্র নিজের আগ্রহের কারণে। অনেকে আশাহত হয়েছিলেন,অনেকে মন্দ কথা বলছেন। তবে,কলেজের শিক্ষকমন্ডলী এবং কিছু সহপাঠীর কারণে কলেজের সময়টা আমার ভালোই কেটেছে। কম মেধাবীরাই মানবিক পড়বে,আমাদের সমাজে এমন ধারণা চালু আছে। এই ধারণা থেকে আমাদের অভিভাবকদের বেরিয়ে আসা উচিত।” এই সাফল্যের রহস্য জানতে চাইলে শাকিল বলেন, “আমি নিজেকে একদমই মেধাবী মনে করিনা। আলহামদুলিল্লাহ,আল্লাহ’র অশেষ রহমত এবং আমার মায়ের দোয়া আমার সাথে আছে। আমার শিক্ষকমন্ডলী এবং বিশেষ কিছু মানুষের অনুপ্রেরণা সবসময় আমাকে উজ্জীবিত করেছে। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
কলেজের সময় থেকে শাকিল বিভিন্ন সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত রয়েছে। সে সাতক্ষীরা স্টুডেন্ট সোসাইটি’র ফাইন্ডিং প্রেসিডেন্ট। বিতর্ক,রচনা,কুইজ সহ বহু প্রতিযোগীতায় জেলার সেরা হওয়ার অর্জন আছে তার। ২০১৮ সালে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগীতায় সে জেলার ‘সেরা মেধাবী’ স্বীকৃতি প্রাপ্ত।
শাকিল ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে অধ্যয়নরত। নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, “আমি একজন ভালো মানুষ হতে চাই। আমার শিক্ষকমন্ডলী’র কাছে আমি চিরঋণী।”সে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।