ফিচার

সাতক্ষীরায় উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা চাষ বাড়ছে

By Daily Satkhira

January 03, 2020

গোলাম সরোয়ার: সাতক্ষীরা জেলাতে উচ্চফলনশীল জাতের সরিষার আবাদ বাড়ছে। কৃষকরা বলছে, স্থানীয় জাতের তুলনায় উচ্চফলনশীল বারি ও বিনা জাতের সরিষা উৎপাদনে লাভ বেশি। ফলে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে এই তেলজাতীয় ফসলটির আবাদ বেড়েছে ২৫ শতাংশ। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ৩ বিঘা পরিমাণ জমিতে বারি-১৫ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। জমি চাষ, বীজবপন ও সার কিটনাশক দিয়ে বিঘা প্রতি ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ হবে। এ হিসাবে ৩ বিঘা জমির সরিষা উৎপাদনে ১৯ থেকে ২০ হাজার খরচ পড়বে তার। তিনি বলেন, তিন বিঘাতে ৮০০ থেকে ৮৫০ কেজি সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন। যার বাজার ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, গেল বছর একই পরিমান জমিতে এই উচ্চফলনসীল জাতের সরিষা উৎপাদন করে খরচ বাদে ৩৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছিলো তার। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ বিঘাতে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। কিন্ত স্থানীয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে গত ২ বছর যাবত উচ্চফলনশীল বারি-১৫ জাতের সরিষা করে বেশি লাভবান হচ্ছেন তিনি। একই উপজেলার সীমান্তবর্তী ছনকা গ্রামের কৃষক কোরবান আলী জানান, চলতি মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। অন্যান্য বছরে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করলেও এই প্রথমবার তিনি বিনা সরিষার আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, গাছে যে পরিমান ফুল এসেছে তাতে ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন এই কৃষক। এদিকে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলাতে সরিষা আবাদ নির্ধারন করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৫০ হেক্টর। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলাতে ৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর, কলারোয়ায় ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর, তালায় ৮৬০ হেক্টর, দেবহাটায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৬০০ হেক্টর, আশাশুনিতে ৩০০ হেক্টর এবং শ্যামনগর উপজেলাতে ১৩০ হেক্টর। যা গত মৌসুমের তুলনায় ৩ হাজার ৩৫৮ হেক্টর বেশি পরিমান। সুত্রটি জানায়, গেল বছর সাতক্ষীরায় সরিষা উৎপাদন লক্ষ্য ছিলো ৯ হাজার ১৪২ হেক্টর। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দ বিশ^াস জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ৫ প্রকার উচ্চফলনসীল জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে বারি-১৪, ১৫, ১৭ এবং বিনা ৪ ও ৯। তিনি আরো বলেন, কৃষক এখন স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করতে চায় না। কারণ বারি এবং বিনা উচ্চফলনসীল জাত। তিনি বলেন, স্থানীয় জাত হেক্টর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদ ১ ম্ট্রেকটন। সেখানে বারি এবং বিনা হেক্টর ২ মেট্রিকটন ফলন হচ্ছে। ফলে এটি চাষ করে কৃষক বেশি লাভবান হচ্ছে।