কালিগঞ্জ

কৃষ্ণনগর ইউপির চেয়ারম্যান মা নাকি মেয়ে!

By daily satkhira

January 09, 2020

নিজস্ব প্রতিনিধি : কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগরে চেয়ারম্যান কন্যা সাফিয়ার দাপটে অতীষ্ট হয়ে উঠেছে ইউনিয়নবাসী। তিনি নিজে চেয়ারম্যান না হয়েও পরিষদের বিভিন্ন খাতাপত্রে স্বাক্ষর করা এমনকি এলাকায় বিচার শালিশ করাসহ বিভিন্ন সনদ পত্রে মায়ের হয়ে নিজে স্বাক্ষর কাজ করে যাচ্ছেন বলে ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। যদিও চেয়ারম্যান সাফিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে মর্মে দাবি করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি জানান, কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান কে এম মোশাররফ হোসাইন সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হলে চেয়ারম্যান পদটি শূণ্য হয়। পরে উপ-নির্বাচনে তার স্ত্রী আকলিমা খাতুন লাকি প্রার্থী হন। ইউনিয়নবাসী মানবিক দিক বিবেচনা করে লাকিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর সাংসারিক জীবনে সময় কাটান। এদিকে তার তালাকপ্রাপ্ত মেয়ে সাফিয়া সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে তদবীর করে নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য মায়ের চেয়ারকে অপব্যবহার করে আসছে। ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সনদ, ওয়ারেশকাম সনদ সহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজাপত্রাদিতে নিজেই মায়ের স্বাক্ষর করে থাকেন। এ ছাড়া প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, আজিবর কাগুচীও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নকল করেন বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় ইউপি আইন না মেনে সকল মেম্বরদেরকে বাবার হত্যার চার্জশীটে নাম ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রেজুলেশনে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেন। যদি তার এই ফৌজদারী অপরাধের বিষয়কে নিয়ে কেউ কথা বলে তাহলে কোন লিখিত অভিযোগ ছাড়াই থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে ফোন দিয়ে পুলিশ পাঠিয়ে হুমকির মুখে রাখে। এলাকাবাসির বড়ধরনের অভিযোগ হল সাফিয়া কোন শক্তির বলে পুলিশকে নিজিরে ইচ্ছেমত ব্যবহার করে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়নে গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পানির লাইন সংস্কারের নামে অর্থ হরিলুট করে। এর মধ্যে বালিয়াডাঙ্গা মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার বরাদ্ধ ২ লক্ষ ৪০ হাজার, কালিকাপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার বরাদ্ধ ১ লাখ ৯০ হাজার, মানপুর মহিলা মাদ্রাসার বরাদ্ধ ১ লাখ ৯০ হাজার। ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের উত্তররঘুনাথপুর নুরালী হাজির মোড় মানপুর হয়ে দক্ষিণরঘুন্থাপুর সানাপাড়া অভিমুখে সুপেয় পানির লাইন সংস্কারের বরাদ্ধ দেড় লক্ষ টাকা। যার একটিতেও বাস্তবায়িত কাজের কোন লক্ষণ মেলেনী। পানির পাইপলাইন সংস্কারের কাজটি মূলত মোশাররফ চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে করেছে বলে এলাকাবাসী তথ্য দেন, অথচ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত না হয়ে স্কিম কমিটির স্বাক্ষর জাল করে সকল অর্থ উত্তোলন হয়ে যায়। বর্তমান সরকারের দারিদ্র নির্মূলের ৪০ দিনের কর্মসূচিতে প্রতি ওয়ার্ডে যে পরিমাণ শ্রমিক হাজির থাকার কথা তার অর্ধেকও হাজির থাকে না। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলেও এলাকার মানুষ কোন প্রতিকার পায়না। সরকারী বয়স্কভতা,বিধবাভাতা সহ সকলপ্রকার উপকারভোগী বাছাইয়ে যে নীতিমালা আছে তার কোন তোয়াক্কা করেনা ,এমনকি এমপি,উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনওর প্রতিনিধির স্বাক্ষর নকল করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত বছর ঈদের চাউল বিতরণ করার সময় প্রায় ২ শতাধিক কার্ডধারীকে চাউল না দিয়ে ফেরৎ পাঠালে এলাকাবাসি ফুসে উঠলে তৎকালীন ইউনওর নিকট অভিযোগ করেও তার সমাধান মেলেনি। এভাবে যদি সরকারের অর্থ অপব্যবহার হয় তাহলে ইউনিয়নের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যহত হবে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে এবিষয়টি অস্বীকার করে চেয়ারম্যান কন্যা সাফিয়া বলেন, আমি কোথাও স্বাক্ষর করি না। কোন বিচার শালিশ ও করি না। মাঝে মধ্যে দুই একজন আমার কাছে আসলে সেগুলো একটু দেখি। এটার আমার বিরুদ্ধে নিছক ষড়যন্ত্র। কিন্তু মাতা চেয়ারম্যান আপনি কিভাবে এসব দেখেন এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেন নি।