প্রেস বিজ্ঞপ্তি : এক সময় চুরি করে সুন্দরবনে কাঠ কাটতো মাজেদ সরদার। নৌকার মাঝি হিসাবে এসব চুরি চামারি দীর্ঘদিন চালিয়ে এসেছে সে। মাত্র কিছুদিনের ব্যবধানে সেই মাজেদ সরদার ও তার ভাই জালাল সরদার ভূমিদস্যু হিসাবে মাথাচাড়া দিয়ে সাতক্ষীরার আশাশুনির দরগাপুর এলাকায় এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সরকারের শত বিঘারও বেশী খাস জমি গুন্ডামি ও জবরদখল করে নিয়েছে। এছাড়া শত মানুষের রেকর্ডীয় পৈতৃক জমি জালজালিয়াতি করে দখলে রেখেছে। বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে তাদের জমি দখল করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছে দরগাপুর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের আদেল উদ্দিনের দুই পুত্র মাজেদ সরদার ও জালাল সরদার। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য তুলে ধরেন এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। রামনগর গ্রামের তন্ময় সরকার তাদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এসময় উপস্থিত ছিলেন মাজেদ সরদারের দাপটে জমি হারানো মোঃ শামসুর রহমান , আব্দুল হাকিম সরদার, আব্দুল মজিদ গাজী, স্বপন ঘোষাল, সনাতন দাস, আব্দুল হাকিম, আমজাদ সরদার, রাতুল বসু, শামসুর রহমান সরদার, চৈতন্য পরামানিক, শের আলী, আমিরুল ইসলাম সহ বহুজন। তারা মাজেদ সরদারের ভূয়া রেকর্ড, জাল দলিল সহ বিভিন্ন প্রমান তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন ৫টি মৌজায় খন্ডিত ৬০ বিঘারও বেশী জমি সে দখল করে নিয়েছে। তকিপুর মৌজায় জেএল ৮২, হালখতিয়ান ৩২, সাবেক ২৭ এর ৬ একর ৯৭ শতক সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক বিভাবতী ঘোষ ৬৯ সালে কলকাতায় মারা যান। অথচ ভূমিদস্যূ মাজেদ সরদার ৭৭ সালে তার ওই সম্পত্তি নিজের স্ত্রী শাহানারা বেগমের নামে জাল দলিল করে দখল করেছে। মাজেদের এই জালিয়াতির পেছনে কয়েক সরকারি কর্মকর্তার সহায়তা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় একই মৌজায় ৪,৫,৬ এসএ খতিয়ানে ২ একর ৯২ শতক খাল যা সরকারের নামে রেকর্ড সেটিও দখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যু মাজেদ। এই অবৈধ দখলের কারনে এলাকার শত শত বিঘা জমি পানি নিষ্কাশিত না হতে পেরে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। একইভাবে সাতমোড়ক মৌজায় ২ ও এসএ খতিয়ানের ৩টি দাগের নদী খাল থাকা সত্ত্বেও ভূমিদস্যু মাজেদের ভাই জালাল ও জামির মোড়ল ৫ একর ৮১ শতক সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, গত ২৭ নভেম্বর তারা এই বিষয়ে ভূমিদস্যূ মাজেদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে তা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নজরে আনা হয়। অথচ এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসী হতাশ হয়ে পড়েছেন। অভিযোগ করে তারা আরও বলেন মাজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় সে এখন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। মাজেদ ও তার বাহিনী স্থানীয়দের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করতে ভাড়াটে নিয়োগ করেছে। আতংকিত হয়ে অনেক নিরীহ গ্রামবাসী বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়েছে। গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন আমরা মাজেদ সরদারের দাপট থেকে বাঁচতে চাই। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করা পর্যন্ত এ অঞ্চলের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। অবিলম্বে তারা তাকে গ্রেফতার ও জবরদখলকৃত সব জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়।