আন্তজার্তিক ডেস্ক: সামরিক বাহিনীর অনিচ্ছাকৃত ভুলে ১৭৬ আরোহীসহ ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ভূপাতিত করার কথা তেহরান স্বীকার করার পর দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পদত্যাগ দাবি করেছে একদল ইরানি বিক্ষোভকারী। স্থানীয় সময় শনিবার টুইটারে প্রকাশিত ভিডিওতে আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের ‘সর্বাধিনায়কের পদত্যাগ, পদত্যাগ’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে। চরম উত্তেজনার মুহূর্তে বিমানটিকে উড্ডয়নের অনুমতি কেন দেয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় একটি বিমান ভূপাতিত করা কথা স্বীকারের পর শনিবার তেহরানে শরীফ ও আমির কবির নামে অন্তত দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। প্রথমে তারা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে জড়ো হয়। কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ তা বিক্ষোভে রূপ নেয়। আধা-সরকারি ফার্স নিউজ এজেন্সি এই উত্তেজনায় পরিস্থিতির একটি প্রতিবেদন করতে গিয়ে কিছু বিরল তথ্য দিয়েছে। সংস্থাটি জানায় যে, এক হাজারের বেশি মানুষ দেশটির নেতাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে এবং সোলাইমানির ছবি ছিঁড়েছে। শিক্ষার্থীরা বিমানটি ভূপাতিত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের, এবং যারা এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার আহ্বান জানিয়েছে। প্রতিবাদী স্লোগানের মধ্যে ছিল ‘কমান্ডার-ইন-চিফ পদত্যাগ করুন’। এখানে তারা শীর্ষ নেতা আলি খামেনিকে উদ্দেশ্য করে স্লোগানটি দিয়েছে। এছাড়া ‘মিথ্যাবাদীদের মৃত্যুদণ্ড দাও’ বলেও তারা স্লোগান দেয়। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ‘ছত্রভঙ্গ’ করে দেয়। বিশেষ করে যারা রাস্তা অবরোধ করে ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় যে, বিক্ষোভে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরাও সরকারের এ পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এদিকে এক টুইট বার্তার মাধ্যমে এই ‘অনুপ্রেরণামূলক’ বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পিএস-৭৫২ বুধবার কিয়েভ যাওয়ার উদ্দেশ্যে তেহরানের ইমাম খোমেনি বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পরই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ইরাকের মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে ওই বিমানটি ভূপাতিত করা হয়। ৩ জানুয়ারি বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় এ হামলা চালায় ইরান। তবে ইরানের ভুলে চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনীয় যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, এতে গভীর অনুশোচনা, ক্ষমা ও শোকপ্রকাশ করেছে তার দেশ। এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে তারা দাবি করেছে, ফের যাতে এমন ভুল না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনীর পর্যায়ে অভিযান প্রক্রিয়ায় মৌলিক সংস্কার আনা হবে।