নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চিহ্নিত বিএনপি ক্যাডার ও ভূমিদস্যু মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান কাশেম কর্তৃক বনজীবী দরিদ্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তির হারি না দিয়ে জোরপূর্বক দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, শ্যামনগর উপজেলার যোতিন্দ্রনগর (মরগাঙ) গ্রামের মৃত নবীন মন্ডলের ছেলে বিরিঞ্চী মন্ডল। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষের পেশা অনুযায়ী আমরা বৈধভাবে সুন্দরবনের মাছ ও কাকড়া ধরে অতিকষ্টে জীবিকা নির্বাহ করি। আমরা অসহায় দরিদ্র হওয়ায় খন্ড খন্ড জমি ক্রয় করে নদীর ধারে বসবাস করে আসছি। আর নদীর ধারের জমি মৎস্য চাষের জন্য উপযুক্ত হওয়ার কারণে বিগত ২০০৬ সালের দিকে একই এলাকার মৃত. জলিল মোড়লের ছেলে বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি ক্যাডার আবুল কাশেম মৎস্য চাষ করার জন্য আমাদের বনজীবী হিন্দু সম্প্রদায়ের খন্ড খন্ড সম্পত্তি হারি দেওয়ার শর্তে গ্রহণ করে। এছাড়াও বিগত ২০০৭ সালে হরিনগর মৌজায় ৩৪৩ নং খতিয়ানে ৫৪ শতক সম্পত্তি একই এলাকার ওয়াজেদ মোড়লের কাছ থেকে আমার কন্যা ঠাকুর রানী মন্ডলের নামে ৩৩ শতক এবং আমার ভাই সাধু চরন মন্ডলের নামে আরো ২১ শতক সম্পত্তি ক্রয় করি। উক্ত সম্পত্তিও ওই আবুল কাশেম হারি দেওয়ার শর্তে গ্রহণ করে এবং ২০০৭ সালের হারির টাকাও পরিশোধ করে। কিন্তু তারপর থেকে উক্ত সম্পত্তির কোন হারির টাকা না দিয়ে অবৈধভাবে ভোগদখল করে যাচ্ছে। শুধু আমাদের সম্পত্তিই নই অত্র এলাকার অনেক অসহায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তিও কৌশলে নিজের ভাই ও আতœীয়দের হারির নামে অবৈধভাবে দখল করে মৎস্য চাষের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তার অত্যাচারে ইতোমধ্যে প্রায় ৫টি হিন্দু পরিবার পৈত্রিক সম্পত্তি ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। বাকী ৪টি হিন্দু পরিবারগুলোকে ভারতে যেতে বাধ্য করতে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে চেয়ারম্যান কাশেম ও তার ভাই নজরুল এবং সহযোগী বায়েজিত ঢালী। হারির টাকা বা জমি ফেরত চাইতে গেলে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এবং খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করতে থাকে। কোন উপায় না পেয়ে গত ০৮/২/২০১৫ তারিখে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করলে তার নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) চেয়ারম্যানের ছোটভাই করিম মোড়লকে নোটিশ দেন এবং মিমাংসার জন্য ২৯/৪/২০১৫ তারিখে দিন ধার্য করেন। সকল কাগজপত্র আমাদের থাকার পরও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সুপারিশের কারণে ওই কর্মকর্তা সঠিক বিচারে ব্যর্থ হয়েছেন। এছাড়াও আমার পৈত্রিক সম্পত্তির মধ্যে ৩৩ শতক সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে ওই চেয়ারম্যান। বিগত ০৫/০১/২০১৫ তারিখে শ্যামনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন সাগর সরেজমিনে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেন, আমার কন্যা ও ভাইয়ের ৫৪ শতক জমি ২০০৭ সালে বিঘাপ্রতি ৭ হাজার টাকা হারি প্রদান করা হলেও ২০০৮ সাল থেতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত হারির কোন টাকা পরিশোধ না করে অবৈধভাবে দখলে রেখেছে ভূমিদস্যু আবুল কাশেম। যা এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল অতিবাহিত হলেও ওই ভূমিদস্যু আমাদের একটি টাকাও পরিশোধ করেনি বা সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়নি। তিনি আরো বলেন, হারির টাকা ও জমির দখল বুঝে না পাওয়ায় আমার জামাতা প্রায়ই কন্যার উপর চাপপ্রয়োগ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়াসহ হুমকি নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। কন্যার সংসারে অশান্তির বিষয়ে চিন্তা করে আমার স্ত্রীও ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কিন্তু ওই চেয়ারম্যান হারির টাকা বা সম্পত্তি না দিয়ে আমাদের ভারতে তাড়িয়ে দেবে ও খুন জখসহ মিথ্যা মামলা জড়িয়ে দিশেহারা করবে বলে হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। যে কোন সময় কাশেম বাহিনী আমাদের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে বলে আমরা আশংকা করছি। এমতাবস্থায় তিনি (বিরিঞ্চী মন্ডল) ওই ভুমিদস্যু কাশেম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।