আজকের সেরা

সংসদে দেওয়া বক্তব্যে সাতক্ষীরায় ব্যাপক উন্নয়নের দাবি জানালেন ডা. রুহুল হক

By Daily Satkhira

January 16, 2020

এম বেলাল হোসাইন: জাতীয় সংসদে সাতক্ষীরায় বিশ্ববিদ্যালয় ও অর্থনৈতিক জোনের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রেখেছেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সাংসদ ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক এমপি। বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের বক্তব্যে এ দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী। জাতি যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন করবে। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যূত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সমার্থক। তাঁর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু ক্ষণজন্মা পুরুষ। অনন্য সাধারণ ‘স্বাধীনতার প্রতীক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর স্থান নির্ধারিত হয়ে আছে বাঙ্গালি জাতির সর্বকালের সর্বোচ্চ আসনে। জাতীয় বাজেট: ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ। গত ১০ বছরে বাজেটের পরিমাণ ৮.৫৭ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি সহজ কথা নয়। এটি সফল হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে। জিডিপি বৃদ্ধি: জিডিপি বেড়ে হেয়েছে ৮.১৫ শতাংশ, মাথাপিছু আয়: প্রায় ২০০০ মার্কিন ডলার, রেমিটেন্স আয়: ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়: ৪৬.৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (সেবাখাত সহ) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ: ৩১.৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দারিদ্রের হার : ২০০৬ সালে- ৪১.৫ শতাংশ বর্তমানে তা নেমে এসেছে ২০ শতাংশ,অতি দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশ এবং আগামীতে আমরা আরো কমিয়ে আনতে চাই। সোয়া ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে উন্নীত হয়েছে। প্রায় ২ কোটি নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা সহ বর্তমানে ৮৭ লক্ষ মানুষ বিভিন্ন ভাতা পাচ্ছে। ৫০ লাখ পরিবারকে কেজি প্রতি ১০ টকা দামে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণের কথা বলি। কয়েকদিন আগে আমরা বই উৎসব পালন করা হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও এমনভাবে বই বিতরণ করা হয় না। আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর এ পর্যন্ত সর্বমোট ২৯৬ কোটি ৭ লাখ ৮৯ হাজার ১৭২টি বই বিতরণ করা হয়েছে। এটি সহজ ব্যবহার নয়। এটি সহজ কথা নয়। এটি কেবল জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। তাই আমরা মনে করি শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। সেই শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে পারলেই হবে আমাদের সফলতা। ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে ১ লাখ ৪২ হাজার শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ১টি কলেজ ও ১টি মাধ্যমকি বিদ্যালয় জাতীয়করন করা হয়েছে। বৃহত্তর জেলাগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।বিভাগীয় শহরে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ: ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যবহারকরীর সংখ্যা: ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০৬ সালে ৩৫ লক্ষ বর্তমানে প্রায় ৯ কোটি ৫০ লক্ষ মোবাইল সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০৬ সালে ১৮ লক্ষ বর্তমানে প্রায় ১৬ কোটি ৪০ লক্ষ ডিজিটাল বাংলাদেশ : ২০০৯ সালের পূর্বে এ ব্যবস্থা ছিলোই না। বর্তমানে ৫ হাজার ৮৬৫টি ডিজিটাল সেন্টার এবং ৮৫০০টি ই-পোস্ট ই-পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ২০০ ধরনের ডিজিটাল সেবা প্রদান করা হচ্ছে। আমি গ্রামের ছেলে। গ্রামের মানুষ কম্পিউটার মোবাইল চিনতই না। আজকে ঘরে ঘরে কম্পিউটার। সেই কম্পিউটার দিয়ে ঘরে বসে আয় করছে। আজকে আমরা স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছি। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে মহাকাশ বিজ্ঞানের যুগে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তার মাধ্যমে প্রচার মাধ্যমে চলে এসেছি। আমরা যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন দেখি তাহলে সব চাইতে বড় প্রযুক্তি আমরা আনতে যাচ্ছি রূপপুর বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্টে। ৩২০০ মেঃওঃ ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ২২ হাজার ৭৬৩ মেগাওয়াট। ২০০৬ সালে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ৪৭% বর্তমানে ৯৫%মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। দেশের সবচেয়ে বড় ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা বন্দর বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং পাচ্ছি। নির্মাণ ১২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে পাবনার রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যারা না গেছেন তারা বুঝতে পারবেন না। যে কি কর্মযজ্ঞ সেখানে চলছে। যে কারণে একটি নদী বন্দর তৈরি করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২৩ হাজারের বেশি চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন নকশায় কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন নির্মাণ শুরু হয়েছে। সেবার পরিধি আরও গড় আয়ু সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির ফলে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। ২০০৬ সালে ছিল ৬৫ বছর ৪ মাস বর্তমানে ৭৩ বছর ৪ মাসে উন্নীত হয়েছে। পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন কাজ ৮৪.৫ ভাগ শেষ হয়েছে। এই সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে জিডিপি ১.২ শতাংশ বাড়বে। মেট্রোরেল উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল এর কাজ চলছে যা ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে যা ২০২০ সাল নাগাদ ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। আমরা নির্বাচনী এলাকা সাতক্ষীরা-৩ আসন। আড়াইটি উপজেলা নিয়ে আমার এলাকা। একেবারে সুন্দরবনের পাশে। আমরা বলতে পারি ভোমরা স্থল বন্দর বছরে ৃ১২শত কোটি টাকার বেশি আয় করি। আমরা চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদন করে ২৫০০শত কোটি টাকা আয় করি। দুধ উৎপাদন.১০০ মে.টন (৩য় স্থান)। এছাড়া চাল (বোরো ও আমনৃ.৬ লক্ষ মেঃটন (চাহিদ ১লক্ষ ২০ হাজার টন মাত্র। আমার সাতক্ষীরার একটি বদনাম ছিলো। সে বদনাম আমরা ঘুচিয়ে ফেলতে পেরেছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতায়। এছাড়া সাতক্ষীরায় আওয়ামালীগের ৩ এমপি একসাথে কাজ করে সেই বদনাম ঘুচিয়ে ফেলেছি। শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগকে দাড় করাতে পেরেছি। আমরা এলাকার কিছু উন্নয়ন কাজ বলতে চাই। আমরা গ্রামীন সড়ক করেছি ১২৪, উপজেলা সড়ক ৬৪.১৮৪ । অন্যান্য সব কথা বলতে পারবো তবে আশাশুনি দেবহাটার কিছু কথা বলে যায়। আশাশুনিতে ৫২.১২ কি.মি. দেবহাটায় ২০.৫ কি.মি ও কালিগঞ্জে ১২.০০ কি.মি উপজেলা রাস্তা, আমরা সাইক্লোন শেল্টার করেছি ৪১টি। এছাড়া অসংখ্য ব্রীজ কালভার্ট করেছি। বিশেষ করে মানিকখালী ব্রীজ। আশাশুনির মানুষের অবস্থা খুব খারাপ ছিলো। আমরা দেখি তেঁতুলিয়া ব্রীজ, বড়দল ব্রীজ, বাঁশতলা ব্রীজ, শোভনালী ব্রীজ (আন্ডার পাস সহ) বসুখালী ব্রীজ বড় রাস্তা: কাদাকাটির হলদে পোতা থেকে প্রতাপনগরের তালতলা বাজার পর্যন্ত ৩৩ কিঃমিঃ রাস্তা। দেবহাটা গাজীর হাট থেকে বুধহাটা ভায়া বদরতলা ২০ কিঃমিঃ রাস্তা আশাশুনিতে ৩ কিঃ মিঃ বাইপাস সড়ক করেছি। আমরা অগণিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতি করেছি। আমার প্রতিটি থাকায় একটি কলেজ এবং স্কুল সরকারি করণ করেছি। আমরা ভবন নির্মাণ করেছি। আমার এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ছিলো না। প্রত্যেকটি থানায় ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন নির্মাণ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন এবং মহিলা কলেজ, ডিগ্রী কলেজ ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করেছি। আমরা চলমান উন্নয়নের কাজের দিকে যদি দেখি তাহলে আমরা ৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আশাশুনি উপজেলা নতুন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুন অডিটোরিয়াম ভবন নির্মাণ, ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আই সি টি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট নির্মাণ, ১১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দৃষ্টি নন্দন মসজিদ নির্মাণ। মরিচ্চাপ রিভারভিউ দৃষ্টি নন্দন কেওড়া পার্ক নির্মাণ। সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণ। অগনিত রাস্তার কাজ চলছে। তবে গ্রামীন যে রাস্তাগুলো এত সরু করা হয়েছে। সেখানে চলাচল কষ্টসাধ্য। সেগুলো চওড়া করা প্রয়োজন। আমরা ৫২টি প্রাইমারী স্কুল আমার এলাকায় হয়েছে। টি আর কাবিখাসহ ৩০০টি মসজিদ এবং ২৯০টি মন্দির সংস্কার এবং সমাজিক অবকাঠামোর মাধ্যমে উন্নয়ন চলছে। আমার এলাকায় কিছু চাহিদা থাকলেও আমি বলবো সাতক্ষীরা জলাবদ্ধতা একটি বড় সমস্যা। এদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে এবং নদী খননের প্রকল্পগুলো এগিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎখাতে কালিগঞ্জের একটি ১৩২.৩৩ কেবি বিদ্যুৎ স্ট্রেশণ বিশেষ প্রয়োজন। আমাদের সাতক্ষীরাব ২৫/৩০লক্ষ মানুষের একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। এছাড়া স্কুল কলেজ এমপিওভুক্তি। তবে বিশেষ করে সাতক্ষীরায় একটি অর্থনৈতিক জোন পেলে সাতক্ষীরার মানুষ উপকৃত হবে। স্বাস্থ্যখাতে সেক্টর মাননীয় শেখ বান্ড আমরা তৈরি করেছি, প্রাচীর সার্জারী সেন্টার আমরা তৈরি করতে পেরেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের ডাক্তারদের পদন্নতি। কয়দিন আগেই আমরা ১৫০০ শত ডাক্তারের পদন্নতি দিয়েছি। কিন্তু তারপরও আজকে সকালে তথ্য নিয়েছি। আমাদের যে ১৭৫৫টি সীটিং পোস্ট খালি। সুতরাং আমরা সবখানে যে মেডিকেল কলেজ করতে চাই। তার প্রয়োজন নেই। আমরাদের হাসপাতালগুলোর উন্নতি যদি করতে এবং আমাদের ব্যবস্থা। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, ডাক্তারদের উপস্থিতির ব্যবস্থা যদি করতে পারি তাহলে এগিয়ে যেতে পারবো।