নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশে বিশ^খ্যাত মানের ওষুধ তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশীয় প্রয়োজনের ৯৭ থেকে ৯৮ শতাংশ ওষুধ এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে। সহজলভ্য হওয়ায় মানুষ ওষুধ কিনতে পারছেন। দেশে গড় আয়ু বৃদ্ধির পেছনে বাংলাদেশের মান উন্নত ওষুধের অবদান রয়েছে। বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরায় ‘ফার্মাসি ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করা ও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অপব্যবহার রোধ’ শীর্ষক এক মত বিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন আয়োজকরা। ওষুধ জীবন রক্ষাকারী অতি প্রয়োজনীয় সম্পদ উল্লেখ করে তারা আরও বলেন এর অপপ্রয়োগ,ভেজাল ওষুধ ব্যবহার, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। এ জন্য ওষুধ ব্যবস্থাপনাকে আরও জীবনমুখী করে তুলতে হবে। এজন্য সরকার প্রণীত নীতিমালা পালন করা জরুরি। ২৫ ডিগ্রী তাপমাত্রার উপরে কোনো ওষুধ ফার্মাসিতে রাখা যাবেনা উল্লেখ করে ওষুধ প্রশাসন কর্মকর্তারা আরও বলেন এতে ওষুধের কার্যকারিতা ও গুনগত মান ঠিক থাকে। তারা বলেন বাংলাদেশে গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। এর নেপথ্য কারণ জনসচেতনতা, সরকারের নানা উদ্যোগ এবং সর্বোপরি দেশে তৈরি গুন সম্পন্ন ওষুধ ব্যবহার। সাতক্ষীরা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি মো. দ্বীন আলি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফার্মাসি কাউন্সিলের সহসভাপতি মোছাদ্দেক হোসেন , বাংলাদেশ ফার্মাসি কাউন্সিলের সাবেক সহসভাপতি সুভাষ চন্দ্র সিংহ রায়, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী ও ইউনি হেলথের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নাজমুল হোসেন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন মো. কওসার আলি, শেখ হারিজুল্লাহ, গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সাবেক সেক্রেটারি ডা. আবদুল গফফার, সাতক্ষীরা সদর সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. জালালউদ্দিন প্রমূখ। প্রধান অতিথি মোছাদ্দেক হোসেন বলেন প্রত্যেক ফার্মাসিস্টের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রয় নয়, এমনকি ফুল কোর্স ছাড়া ওষুধ বিক্রয় সরকারের নীতিমালা বিরোধী। তিনি বলেন সরকার স্বাস্থ্য সেবাকে বহুদুর এগিয়ে নিয়েছেন। দেশে প্রয়োজনীয় ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে এবং এর গুনগত মান বিশ^মানের উল্লেখ করে তিনি বলেন ফার্মাসিস্টদের যথাযথ লাইসেন্স থাকতে হবে।বিক্রি না হলে মেয়াদোত্তীর্ন ওষুধ একদিনও রাখা উচিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন তা ফেরত নেওয়া হবে। মত বিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ফার্মাসি কাউন্সিলের সাবেক সহসভাপতি সুভাষ চন্দ্র সিংহ রায় বলেন দেশে এক লাখ তিরিশ হাজার ৪৩১ টি ফার্মাসি রয়েছে। ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধকালে এক হাজার তিনশ’ মুক্তিযোদ্ধা কেমিস্ট হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার আলবদরদের হাতে শহীদ হন উল্লেখ করে তিনি বলেন সমাজে ফার্মাসিস্টরা অনেক গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি। তারা কেবল ব্যবসায়ী নন, তারা মানুষের জীবন রক্ষায় ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে বহুদুর এগিয়েছে। তিনি বলেন ওষুধ প্রশাপসনে চিকিৎসক. ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসকদের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। বিশেষ অতিথি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী বলেন অ্যান্টি বায়োটিক ওষুধের প্রেসক্রিপশন ও তা বিক্রির বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। তিনি বলেন এসব বিষয়ে কেউ যাতে কারও কাছ থেকে কোনো অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পারে সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি সাতক্ষীরা জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি মো. দ্বীন আলি সমিতির পক্ষে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে বলেন আমরা সরকারের নীতিমালা মেনে চলতে চাই। ফার্মাসি ব্যবস্থাপনায় কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন জেলার সব ফার্মাসি মালিককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।
১৬.০১.২০