যখন দরকার, ঠিক তখনই দলের পাশে দাঁড়ানোর উদাহরণ তার অনেক আছে। বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আবারও দলকে উদ্ধার করলেন তিনিই। বলা হচ্ছে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর কথা। প্রায় ছয় মাস পর টুর্নামেন্টে গোলখরা কাটালেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। পিছিয়ে পড়েও তার জোড়া গোলে ১০ জনের বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ২-১ এ জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
ঘরের মাঠ অ্যালিয়েঞ্জ এরেনায় প্রথম ৪৫ মিনিট শাসন করেছে বায়ার্ন। বল দখল থেকে শুরু করে প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ভীতসন্ত্রস্ত করতে সফল হয়েছিল তারা। ২৪ মিনিটে ফ্রাঙ্ক রিবেরি গোলদাতা হতে পারতেন। ডিবক্সের মধ্যে তার শটটি রিয়াল ফরোয়ার্ড গ্যারেথ বেলের গায়ে লেগে কর্নার হয়। ওই আক্রমণ ঠেকিয়ে রিয়াল ঠেকিয়ে দিলেও ওই কর্নার ছিল বায়ার্নের গোলমুখ খোলার চাবি। থিয়াগো আলকান্তারার ভাসিয়ে দেওয়া বলটি হেড করেন আরতুরো ভিদাল। চিলিয়ান স্ট্রাইকারের মাথা ছুঁয়ে আসা বলটি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও রুখতে পারেননি রিয়ালের গোলরক্ষক কেইলর নাভাস।
বিরতির ঠিক কয়েক মিনিট আগে রিবেরির একটি শট ঠেকান কারভাহাল। রেফারি দেখতে পান সেটা রিয়াল ডিফেন্ডারের হাতে লেগেছে, পেনাল্টির বাঁশি বাজান তিনি। দ্বিতীয় গোল করে নায়ক হতে পারতেন ভিদাল। ভাগ্য সহায় ছিল না তার। স্পটকিক থেকে নেওয়া শটটি গোলবারের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধে একবারই রিয়াল লক্ষ্যে শট নিতে পেরেছিল। পোস্ট বরাবার রোনালদোর নেওয়া শটটি ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন ন্যুয়ার। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় রিয়াল। বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে কারভাহালের দারুণ ক্রস। প্রথম স্পর্শেই বায়ার্নের জালে বল পাঠান রোনালদো। ৬৬০ মিনিট পর চ্যাম্পিয়নস লিগে গোলের দেখা পান তিনি। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে স্পোর্তিং লিসবনের বিপক্ষে সর্বশেষ গোল করেন সিআরসেভেন। গোলখরা কাটিয়ে যেন নিজেকে ফিরে পেলেন রোনালদো। ৭৭ মিনিটে মার্কো আসেনসিওর বানিয়ে দেওয়া বলে আবারও গোল করেন তিনি। এ গোলে ইউরোপীয় ফুটবলে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ গোলের মাইলফলকে নাম লিখলেন রোনালদো। এর আগে ৬১ মিনিটে মার্তিনেজ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে ১০ জনের দল হয় বায়ার্ন। আরও দুটি গোল রিয়ালের স্কোরশিটে জায়গা করে নিতে পারত। করিম বেনজিমা ও সের্হিয়ো রামোসের গোলটি অফসাইডে বাতিল হয়।
আগামী ১৮ এপ্রিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালের মুখোমুখি হবে বায়ার্ন। যেখানে আনচেলত্তির শিষ্যদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে।
একই দিন রিয়ালের নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ স্বাগত জানিয়েছিল লিস্টার সিটিকে। রূপকথা লিখতে পারেনি ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। আন্তোয়ান গ্রিয়েজমানের ২৮ মিনিটের গোলে প্রথম লেগে ১-০ তে জয় পেয়েছে অ্যাতলেতিকো।
এর আগে মোনাকোর মুখোমুখি হয় বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। মঙ্গলবার দলটির টিম বাসে বোমা বিস্ফোরণের পর ম্যাচ একদিন পেছানো হয়। আকস্মিক ওই ঘটনার প্রভাব পড়েছিল ম্যাচেও। যার পুরো সদ্ব্যবহার করতে সফল মোনাকো। ফরাসি ক্লাবটি ৩-২ গোলের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে। সিগন্যাল ইদুনা পার্কে কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল মোনাকো।
১৯ মিনিটে এমবাপ্পে গোলমুখ খোলেন। আধা ঘণ্টা পার হওয়ার কিছুক্ষণ পরে সভেন বেন্ডার আত্মঘাতী গোলে মোনাকোকে দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ৫৭ মিনিটে ডেম্বেলের গোলে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় জার্মান জায়ান্টরা। কিন্তু ৭৯ মিনিটে এমবাপ্পে নিজের দ্বিতীয় গোল করলে ডর্টমুন্ডের সব আশা ভেস্তে যায়। দলটির জাপানি মিডফিল্ডার শিনজি কাগাওয়ার ৮৪ মিনিটের গোল শুধু ব্যবধানই কমিয়েছে।