আন্তর্জাতিক

২০০০ ধনীর হাতে পৃথিবীর ৪৬০ কোটির বেশি গরিবের সম্পদ

By daily satkhira

January 20, 2020

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত বছর বিশ্বের দুই হাজার ১৫৩ জন শীর্ষ ধনীর হাতে ৪৬০ কোটি গরিব মানুষের সম্পদের চেয়েও বেশি পরিমাণ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ছিল। অন্যদিকে, একই সময়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে নারী এবং তরুণীদের অবৈতনিক বা একেবারেই নগণ্য মজুরির কাজের অবদান ছিল প্রযুক্তি খাতের মোট অবদানের প্রায় তিনগুণ। সোমবার নাইরোবিভিত্তিক অলাভজনক আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতাদের বার্ষিক বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনের আগে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

‘টাইম টু কেয়ার’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে নারীরা কোনও ধরনের পারিশ্রমিক বা স্বীকৃতি ছাড়াই প্রত্যেকদিন মোট ১ হাজার ২৫০ কোটি ঘণ্টা কাজ করেন। নারীদের অবৈতনিক এসব কাজের মূল্য অন্তত ১০ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রযুক্তি খাতের অবদানের প্রায় তিনগুণ। অক্সফাম ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অমিতাভ বেহার রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের জন্য এটা বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, অর্থনীতির লুকানো ইঞ্জিন হচ্ছে নারীদের অবৈতনিক এসব কাজ। এটা পরিবর্তন করা জরুরি।

বিশ্ব অর্থনীতির অসাম্য উল্লেখ করতে গিয়ে অমিতাভ বুচু দেবী নামে এক ভারতীয় নারীর উদাহরণ টেনে আনেন অমিতাভ। বুচু দেবী প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা রান্না, তিন কিলোমিটার হেঁটে পানি আনা, স্কুলের জন্য সন্তানদের প্রস্তুত করার মতো কাজে ব্যয় করেন। অথচ এত খাটুনির পরও তেমন কোনও পারিশ্রমিক পান না তিনি।

‘অন্যদিকে দেখা যায়, দাভোসে বিলিয়নিয়াররা জড়ো হচ্ছেন তাদের ব্যক্তিগত প্লেন, জেট, অতিধনী জীবনধারা নিয়ে।’

অক্সফাম ইন্ডিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এই বুচু দেবী একজন নন। ভারতে আমি প্রতিদিনই এসব নারীর মুখোমুখি হই, আর এই গল্পটা বিশ্বজোড়া। আমাদের এটা পরিবর্তন করতে হবে, বিশেষ করে বিলিয়নিয়ারের বৃদ্ধি। তিনি বলেন, চারদিকে দেখলে দেখবেন বিশ্বের ৩০টির বেশি দেশে বিক্ষোভ চলছে। মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, আর তারা কী বলছে? তারা এই অসাম্য মানবেন না, তারা এমন পরিস্থিতিতে বাঁচতে চান না।

অমিতাভের মতে, এমন পরিস্থিতি দূর করতে সরকারের উচিত ধনীরা যেন তাদের ট্যাক্স পরিশোধ করেন তা নিশ্চিত করা। এরপর সেই অর্থ বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্যসেবা, ভালো মানের স্কুল প্রতিষ্ঠার মতো কাজে ব্যয় করতে হবে।