ন্যাশনাল ডেস্ক: ডিজিটাল বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে গেল। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। আর ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট চালু করার প্রধান অবকাঠামো ইলেকট্রনিক গেট বা ই-গেট। বিমানবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে মোট ৫০টি ই-গেট স্থাপন করা হচ্ছে।
বর্তমানের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে পাসপোর্টের একটি পাতায় পলিমারের তৈরি একটি কার্ড থাকবে। ওই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ই-পাসপোর্ট কার্যকর করতে প্রকল্পের আওতায় জার্মানি থেকে ৫০টি ই-গেট আনা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ই-গেট দেশে এসেছে এবং তা স্থাপন করা হয়েছে।
জানা গেছে, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে তিনটি করে মোট ছয়টি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে। ডিপার্টচারে তিনটি ও অ্যারাইভেলে তিনটি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে। গেটগুলো ইতোমধ্যে শাহজালাল ইমিগ্রেশন পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
দেশের প্রধান ও ব্যস্ততম বিমানবন্দরে এসব ই-গেট স্থাপনের ফলে ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীদের খুব অল্প সময়ে ইমিগ্রেশন শেষ করা সম্ভব হবে। যা বিমানবন্দরের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
এদিকে শুধু শাহজালাল বিমানবন্দরেই নয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ই-গেট স্থাপন করা হবে। সব মিলিয়ে এর পরিমাণ হবে ৫০টি। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এসব ই-গেট স্থাপন করলেও পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি পাসপোর্টের আধুনিকায়ন এবং নিরাপত্তা অধিকতর নিশ্চিত করাসহ বিদেশ ভ্রমণ ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সহজীকরণের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রবর্তন করেছে। ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ই-গেট স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা। বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরা ই-গেইট ব্যবহার করতে পারবেন। ই-গেট ব্যবহারের জন্য কিছু ব্যবহার বিধিও প্রণয়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টধারী যারা ই-গেট ব্যবহার করতে পারবেন ই-পাসপোর্টধারী কূটনৈতিক, অফিসিয়াল ই-পাসপোর্টধারী সরকারি কর্মকর্তা, বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এবং সেরা করদাতা কার্ড পাওয়া ই-পাসপোর্টধারী এবং বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টধারী পাইলট ও ক্রুরা।
এছাড়া এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাত্রীর ব্যাগেজ, টিকেট এবং পাসপোর্ট চেকিং সম্পন্নের পর ই-গেইট ব্যবহার করতে হবে। যাত্রীর ফ্লাইটের তথ্য, শেষ গন্তব্যস্থান, যাত্রা শুরুর স্থান, ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও ভিসার তথ্য অবশ্যই ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ডাটাবেজে সংরক্ষিত তথ্যের সঙ্গে ই-গেট সিস্টেমে সংরক্ষিত তথ্য যাচাই করতে হবে। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশের যাত্রীরা প্রাথমিকভাবে ই-গেট ব্যবহার করতে পারবে না।