জাতীয়

ধর্ষণের প্রতিবাদে নৈশপ্রহরী খুন

By daily satkhira

January 23, 2020

ন্যাশনাল ডেস্ক:  সানাউল্লাহ এবং মোয়াজ্জেম। দুজনেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক। গত ১২ জানুয়ারি রাতে চা খাওয়ার জন্য নৈশপ্রহরী নাছিরের দোকানে যান সানাউল্লাহ। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন মোয়াজ্জেম। সম্প্রতি সানাউল্লাহ এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে জরিমানা দেন। এ নিয়ে তাকে ভৎর্সনা করেন নৈশপ্রহরী নাছির উদ্দিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোয়াজ্জেমের সহায়তায় দোকানে থাকা বটি দিয়ে নাছিরের মাথায় কোপ দেন সানাউল্লাহ। এ সময় আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে মহাসড়কে ছুটে গেলে গাড়িচাপায় ঘটনাস্থলে মারা যান নাছির। সারারাত মরদেহের ওপর দিয়ে গাড়ি চলার কারণে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে নাছিরের শরীরের বিভিন্ন অংশ।

নৈশপ্রহরী নাছির উদ্দিন হত্যার ঘটনায় সানাউল্লাহ ও মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

জানা গেছে, গত ১৩ জানুয়ারি সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জেলার চান্দিনা উপজেলার নাওতলা এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা থেকে নাছির উদ্দিনের ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মরদেহের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা রবিউল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে চান্দিনা থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্তের ভার দেয়া হয় জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহা. ইখতিয়ার উদ্দিনকে।

হত্যাকাণ্ডের ১০ দিনের মাথায় দুই ঘাতক চান্দিনা উপজেলার মাদুল মিয়ার ছেলে মোফাজ্জেল ওরফে মোয়াজ্জেম (২৪) এবং একই উপজেলার নাওতলা গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সানাউল্লাহকে (২০) গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি উদ্ধার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি এবং সায়েন্টিফিক ইনভেস্টিগেশনের মাধ্যমে ডিবির এলআইসি টিম বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে মোয়াজ্জেম নামে একজনকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে নাছির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং আসামি সানাউল্লাহর নাম প্রকাশ করে। পরে বুধবার রাতেই মূল ঘাতক সানাউল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কেউ যাতে তাদেরকে সন্দেহ করতে না পারে এজন্য তারা এলাকা ত্যাগ করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আজিম-উল আহসানসহ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে দুই ঘাতক গ্রেফতার হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে নিহত নাছির উদ্দিনের পরিবারের মাঝে। নিহত নাছিরের স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘ওরা আমার কাছ থেকে আমার নিরপরাধ স্বামীকে কাইরা নিছে, মেয়েটারে এতিম কইরা দিছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।’