শ্যামনগর প্রতিনিধি : পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্চে গোলপাতা আহরণ মৌসুম-২০২০ শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরার বুড়িগোয়ালীনি রেঞ্চ অফিস হতে বাওয়ালিদের সুন্দরবনে প্রবেশের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মৌসুম শুরু হয়। গোলপাতা আহারন শুরু হওয়ায় জেলে বাওয়ালীদের মাঝে প্রাণ চঞ্চালতা ফিরে এসছে। চলতি বছর সাতক্ষীরা রেঞ্চে একটি কুপ হতে আগামী (ফেব্রুয়ারী-মার্চ) পর্যন্ত দু’মাস ব্যাপী বাওয়ালিরা সুন্দরবনে নির্ধারিত স্পট হতে গোলপাতা আহরন করবেন। গোলপাতা আহরন মৌসুম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন সহ বাওয়ালিদের নিরাপত্তা দিতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সহকারী রেঞ্চ কর্মকর্তা (এসিএফ) এম এ হাসান জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্চে গোলপাতা আহরনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ হাজার কুইন্টাল (এক লাখ ২৫ হাজার ৯৬০ মন)। প্রতি কুইন্টালের জন্য রাজস্ব ২৫ টাকা। একটি নৌকায় সর্বোচ্চ ১৮৫ কুইন্টাল (৫শত মন) গোলপাতা বহন করা যাবে। অতিরিক্ত বহন করলে বাওয়ালিদের কুইন্টাল প্রতি অতিরিক্ত ৭৫ টাকা রাজস্ব আদায় করা হবে। সুন্দরবনের ৪১, ৪২, ৪৬,৪৭,৪৮, ৫০ (এ) এবং ৫০ (বি) কম্পার্টমেন্ট এলাকা হতে গোলপাতা আহরনের স্পট নির্ধারিত হয়েছে। গোলপাতা ছাড়া বাওয়ালিরা সুন্দরবন হতে অন্য কোন কাঠ সংগ্রহ করতে পারবেন না। অবৈধভাবে কাঠ আহরন কারীদের প্রতিটা হেতাল কাঠের জন্য ১০টাকা, কচিপাতা (হলুদ রঙের মাইট পাতা) ৪ টাকা, ঠেকপাতার জন্য ১০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। তাছাড়া গোলপাতা কেটে নষ্ট করার জন্য ৫০ টাকা, গোলঝাড় নষ্ট হলে ১০০ টাকা এবং প্রতিটা গরানকাঠের লাঠির জন্য ৬ টাকা জরিমানা আদায় করা হবে। সুন্দরবনের বন্য প্রাণীর হামলা থেকে রক্ষা সহ গোলপাতা আহরনের নিয়মাবলী সম্পর্কে বাওয়ালিদের পর্যাপ্ত ধারনা দেওয়া হয়েছে। বনদস্যুদের হাত থেকে বাওয়ালিদের নিরাপত্তা দিতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে টহল জোরদার করা হয়েছে তিনি জানান। উপকূলীয় গাবুরা গ্রামের পেশাদার বাওয়ালি ফিরোজ ও কবির সহ অনেকে জানান, বনদস্যু জিয়া বাহিনীর ভয়ে তারা আতঙ্কিত। তার পরেও জীবিকার তাগিদে পরিবার পরিজন ফেলে গোলপাতা আহরনের জন্য সুন্দরবনে যেতে হচ্ছে। গোলপাতা আহরন মৌসুমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সার্বিক নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন বাওয়ালিরা।