আন্তর্জাতিক

চীনের শহরগুলো যেন ভূতুড়ে নগরী; মৃত ২৫৯, আক্রান্ত ১১ হাজার

By Daily Satkhira

February 01, 2020

বিদেশের খবর: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস পুরো চীনে ছড়িয়ে পড়ায় দেশটিতে এখন শুধু ঘরবন্দি হয়ে সময় পার করতে হচ্ছে নাগরিকদের। দেশটির ৩১টি প্রদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। আর এই কারণে অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে মহাপ্রাচীরগুলো। মহানগরীগুলো এখন ভূতুড়ে শহর। কোথাও কোনো কোলাহল নেই। নেই কোনো ব্যস্ততা।

স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি সমস্ত যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থী ও নাগরিকদেরও ঘর থেকে বাহির হতে দেয়া হচ্ছে না। ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের উহান শহরে স্থানীয় সরকার বাস, ট্রেন, বিমান সব বন্ধ করে দিয়েছে। দোকানপাট বন্ধ। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে শীতকালীন ছুটি। ফলে ক্যাস্পাস ফাঁকা, উহান শহরটা একদম জনশূন্য। আতঙ্ক এবং উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে সবার মাঝে।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২৫৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১১,০০০ ছাড়িয়ে গেছে।

এদিকে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ পর্যন্ত চীন, থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, হংকং, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র চীনের মধ্যাঞ্চলের উহান শহর থেকে শত শত বিদেশি নাগরিককে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং নিহতের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের উহান থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।

তবে বিস্তার ঠেকাতে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ চীনগামী বিমানের ফ্লাইট বাতিল করছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, এয়ার এশিয়া, ক্যাথে প্যাসিফিক, এয়ার ইন্ডিয়া ও ফিনএয়ার ইতোমধ্যে চীনগামী বিমানের সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।

২০০৩ সালে একই গোত্রের ভাইরাস সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোমের (সার্স) প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় চীনে। সেই সময় সার্সে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবার ছাড়িয়ে গেছে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস। চীন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববাজারে বড় ধরনের ধাক্কার আশঙ্কা করা হচ্ছে।