সাতক্ষীরা

ব্যাংদহা বাজারে সরকারি পুকুর দখল করে দোকানঘর নির্মাণ !

By Daily Satkhira

April 16, 2017

এম. বেলাল হোসাইন : ব্যাংদহা বাজারের সরকারি পুকুর দখল করে অবৈধ ভাবে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্যাংদহা বাজারের সরকারি পুকুরের জায়গায় পানি নিস্কাশনের পর অবৈধ পাকা দোকানঘর নির্মাণ কাজ চলছে স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আর বাজার কমিটি ম্যানেজ করে। প্রকাশ্যে অবৈধ নির্মাণ কাজ করলেও কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে নিশ্চুপ থাকায় জনমেন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ফিংড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসার মুনছুর আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি আর্থিক সুবিধা নিয়ে ব্যাংদহা বাজারে পেরিফেরি সম্পতির নামে সরকারি পুকুর ডিসিআর দিয়ে সেখানে অবৈধ পাকা দালান নির্মাণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এর আগেও আরো একটি পুকুরের পাশে সোলাইমনের চায়ের দোকানের নারিকেল গাছ কর্তন, পুকুরে নামার ঘাট বন্ধ এবং সরকারি টিউবওয়েল বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। উক্তস্থানে দোকান ঘর হলে পুকুরে নামার কোন পথ থাকবে না। ফলে পুকুর ইজারা দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে এবং পুকুরটি আর কোন ব্যবহারও করতে পারবে না বলে এলাকাবাসি জানায়। এলাকাবাসি আরো জানায়, ব্যাংদহা বাজারটি তিনটি ইউনিয়নের মোহনায় অবস্থিত। বাজার ঘেষে গেছে মরিচ্চাপ নদী। এ নদী দিয়ে এসব ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশিত হয়ে থাকে কিন্তু ইউনিয়ন ভুমি কর্তার সহায়তায় কতিপয় অসাধু ব্যাক্তি নদীর জায়গায় মাটি ভরাট দিয়ে অবৈধ দখল করে নদীর পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করছে। এভাবে দখল করতে থাকলে এলাকায় জলাবদ্ধতায় পরিণত হবে। বিগত কয়েক বছর পূর্বে বর্তমান খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আলহাজ মো. আব্দুস সামাদ জেলা প্রশাসক থাকাকালীন নিজ প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরা সকল উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে খনন করেছিলেন মরিচ্চাপ নদী। ফলে জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছিল এলাকাবাসি। কিন্তু ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তার অর্থবানিজ্যের কারণে আবারো অবৈধভাবে দখল করায় নদী বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান নদীর কোথাও ৩ হাত আবার কোথাও ১/২ হাত রয়েছে। এভাবে দখল হতে থাকলে খুব শিঘ্রই মরিচ্চাপ নদীর চিহ্ন আর পাওয়া যাবেনা। এতে জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে সকলকে আটকা পড়তে হবে বলে আশংকা করছে সচেতন মহল। এদিকে ব্যাংদহা বাজারের উপর দীর্ঘ দিনের পুরনো ২টি পুকুর। এ পুকুরে ইজারা নিয়ে মাছ চাষও করে আসছে স্থানীয়রা। পাশাপাশি ওই পুকুরের পানি দিয়ে রান্না এবং গোসলের প্রয়োজন মিটায় এলাকার হাজারো মানুষ। এর মধ্যে একটি পুকুরের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে পুকুরপাড় ও পুকুরের কিছু অংশ পেরিফেরির সরকারি জায়গা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মোনায়েম হোসেন ও জোড়দিয়া গ্রামের শেখ সাজ্জাত আলীর ছেলে শেখ আজমির হোসেন বাবু পাঁচ লক্ষ টাকায় জোড়দিয়া গ্রামের হচেন মল্লিকের ছেলে পল্লী চিকিৎসক গাওছুল মল্লিক ও শেখ নেছার উদ্দীনের ছেলে চায়ের দোকানদার শেখ সুলাইমান আলীর কাছে বিক্রি করে। কয়েকদিন আগে গাওছুল মল্লিক ও সুলাইমান আলী ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা মুনসুর আলীকে ম্যানেজ করে পেরিফেরি নামে ডিসিআর নিয়ে রাতের আধারে পুকুরের পানি নিস্কাশনের পর দিবালকে ঢালাই পিলার দিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে ঘরের বিম নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে ব্যাংদহা বাজারের কয়েকজন দোকানদার জানান, ফিংড়ী ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা ও ব্যাংদহা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদককে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে পুকুরে নামার পথ বন্ধ করে কারো তোয়াক্কা না মেনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এ দুই ব্যক্তি। এভাবে অবৈধ দখলমুক্ত না করা গেলে এলাকার বাকি পুকুরের জায়গা খুব শীঘ্রই বেদখল হয়ে যাবে বলে আশংকা প্রকাশ এলাকাবাসী। ফিংড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসার মুনছুর আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আর্থিক সুবিধা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ব্যাংদহা বাজারে পুকুরের পাড় থেকে পুকরের ভিতরে ২০ ফুট সরকারি পেরিফেরি সম্পত্তি রয়েছে। আমরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে খোজখবর রাখছি। প্রয়োজনে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ হবে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসি বাজারের পুকুরে নামার পথ বন্ধ করে  দোকান ঘর নির্মাণ কারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।