রাজনীতির খবর: শেখ ফজলে নূর তাপসের ছেড়ে দেয়া ঢাকা-১০ আসনে নৌকার হাল ধরবেন কে? বঙ্গবন্ধু পরিববার, তাপসের পরিবার নাকি পরিবারের বাইরের কেউ সংসদের এ আসনের টিকিট পাচ্ছেন- এমন কৌতূহল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে স্থানীয় নেতাকর্মীসহ সবার মনে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যসহ অনেক রাজনীতিবিদই রয়েছেন আলোচনায়।
ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানা নিয়ে ঢাকা-১০ আসন। ফজলে নুর তাপস পরপর ৩ বার এ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। ঢাকা দক্ষিণের নগরপিতা হওয়ার দৌড়ে শামিল হতে এরই মধ্যে এ আসনটি ছাড়তে হয় তাকে।
নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী, কোনও আসন শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যেই ওই আসনে উপনির্বাচন হতে হবে। কাজেই তাপসের পর কে হচ্ছেন ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। তবে দলটির কর্মীরা চায় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কেউ প্রার্থী হোক।
আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, তাপসের বড়ভাই শেখ ফজলে শামস পরশ এবং তাপসের স্ত্রী আফরিন তাপস।
পরিবারের পাশাপাশি ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানককে নিয়েও রয়েছে আলোচনা। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমি এখনো এসব নিয়ে কিছু চিন্তা করছি না। তফসিল ঘোষণার পরই আমরা ওই নির্বাচন নিয়ে নেত্রী ভাববে। সিটি নির্বাচনের মতোই ঢাকা-১০ আসনেও যোগ্য, জনপ্রিয়, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির প্রার্থীকেই বেছে নেয়া হবে বলে জানান এ নেতা।
নিয়মানুযায়ী এই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে উপনির্বাচন হবে শিগগিরই। এতে ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন পেতে দলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত কে হবে এই আসনের সংসদ সদস্য সেটি নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মনোনয়ন দেয়ার উপর।
ঢাকা-১০ আসনে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এর আগে এই আসনটি বিএনপির দখলে ছিল। তাপস এমপি হওয়ার পর এই আসনটি আওয়ামী লীগের দূর্গে পরিণত হয়।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধিত্ব করা নানককে দলীয় আনুগত্যের পুরষ্কার হিসেবে এবার ঢাকা-১০ আসনে নেত্রী মনোনয়ন দিতে পারেন এমন আলোচনা রয়েছে আওয়ামী লীগে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনে দলীয় টিকিটে নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর নামও শোনা যাচ্ছে এই আসনে। ফরিদপুরে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। জাফরউল্লাহ দলীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করায় বেশিরভাগ সময় ঢাকায়ই থাকেন। এ কারণে এই হেভিওয়েট নেতাকে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ভাবা হচ্ছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
ছোট ভাই তাপসের ছেড়ে দেয়া এ আসনে মনোনয়ন চাইতে পারেন তার বড় ভাই যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। গত ২৩ নভেম্বর যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে শেখ পরশ ক্লিন ইমেজের। তার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা আছে।
এছাড়া এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। বঙ্গবন্ধুর এই দৌহিত্র আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া প্রার্থী হিসেবে জোরালো সম্ভাবনা আছে তাপসের সহধর্মিণী আফরিন তাপসের। বিগত নির্বাচনে তিনি তাপসের পক্ষে মাঠে নেমেছিলেন। স্বামীর পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। ফলে ধানমণ্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট এলাকার প্রতিটি ভোটার তাকে চেনেন ও জানেন।
ঢাকা-১০ আসনে দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আসনটিতে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।