জাতীয়

সকল ডিসির প্রতি নোট-গাইড বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর

By daily satkhira

February 06, 2020

ন্যাশনাল ডেস্ক:  নোট ও গাইড বিক্রি বন্ধে জেলা প্রশাসকদের প্রতি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ নির্দেশনা দেন তিনি। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্ন গাইড বইয়ের প্রশ্নের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় এই নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

এদিকে গাইড বইয়ের সঙ্গে প্রশ্নপত্র হুবহু মিলে যাওয়ার ঘটনায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড তদন্ত শুরু করেছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘তদন্ত শুরু করেছি। কোন বোর্ডের কে কীভাবে করেছে, তা তদন্ত হচ্ছে। বিভিন্ন গাইড বই নিয়েও তদন্ত করা হচ্ছে। আগামী রবি-সোমবারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পারবে তদন্ত কমিটি।’

এসএসসির প্রশ্নপত্রের সঙ্গে গাইড বইয়ের প্রশ্ন হুবহু মিলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গাইড বই ও নোট বইয়ের ব্যবহার আমরা বন্ধ করতে চাই। সৃজনশীল পদ্ধতিতে এটির প্রয়োজন হবার কথা নয়। আমরা এর আগেও বলেছি, কোনও কোনও গাইড ও নোট বই মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান অনৈতিকভাবে কোনও কোনও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে প্রভাবিত করে শিক্ষার্থীদের কিনতে বাধ্য করেন। আমাদের সব স্তরে এই সচেতনতা দরকার, গাইড ও নোট বই থেকে নিজেদের দূরে রাখার বিষয়ে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘অভিভাবকরাও যদি আরেকটু সচেতন হন যে, সৃজনশীল পদ্ধতিতে আমার সন্তানের নোট ও গাইড বই প্রয়োজন হবার কথা নয়। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ হয়তো এর সঙ্গে জড়িত থাকে না। গুটিকয়েক হয়তো জড়িত থাকে। এ বিষয়ে যেন সবাই সচেতন হন।’

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘আমি জেলা প্রশাসকদের বলবো— নোট ও গাইড বই যেন বাজারে বিক্রি না হয়, তাদের আমরা সহযোগিতা চাই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সারাদেশে এটি বন্ধ করা সম্ভব নয়, যদি আমরা সবাই সচেষ্ট না হই। আপনাদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।’

গাইড বই থেকে প্রশ্ন প্রণয়নের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একেবারে যে কোনও প্রশ্ন রিপিট হবে না, সেটা করা খুবই কষ্টকর। গাইড বইগুলোতে প্রশ্ন আসে কোথা থেকে। আগের বছরে যেসব প্রশ্ন থাকে, সেগুলোই গাইড বইতে ছাপায়। এবার আমাদের পাঁচ হাজার ৫৮০ সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়েছে। কী বিশাল কর্মযজ্ঞ একবার চিন্তা করে দেখেন। সেখান থেকে ২ হাজার ৭৯০ সেট প্রশ্ন ছাপানো হয়েছে। এখানে কত প্রশ্নপত্র সেটা এবং মডারেটর লাগে। মডারেটররা যখন প্রশ্ন সেট করেছেন, সেখানে কারও দেখার সুযোগ থাকে না। কিছু না কিছু প্রশ্ন সারাজীবনই রিপিট হয়। আমরা যখন পড়েছি, তখন আগের ১০ বছরের প্রশ্নপত্র দেখে পড়েছি। কোনও প্রশ্নই রিপিট হবে না এটা অসম্ভব। তবে হুবহু না হওয়াই উচিত। ইতোমধ্যে শনাক্ত করেছি ওই প্রশ্নপত্র কে করেছেন। সেটি আমরা দেখবো। ’

এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র বিতরণে বিশৃঙ্খলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্নপত্র বিতরণে সমস্যা হয়েছে প্রথম দিন। ৫২ হাজার কক্ষে পরীক্ষা হয়। সেই ৫২ হাজারের মধ্যে ১৫টি কক্ষে সমস্যা হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে এটা খুবই কম, কিন্তু সেটিই বা কেনও হবে। এই সমস্যাগুলো পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার উৎকণ্ঠায় না দেখতে পারে, কিন্তু যারা দায়িত্বে থাকেন, তাদের তো দেখবার কথা। মূলত নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র নিয়ে সমস্যাটি হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সব কিছু আলাদা করে রেখেছি, যেন পরীক্ষার্থীরা কোনো্ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এসব সমস্যা শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার চেষ্টা আমাদের অব্যাহত আছে।’