সরকার ও বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী আটকেপড়া লোকজনদের সরিয়ে নেয়ার সময় শনিবার বাসের বহরে বোমা হামলা চালানো হয়। শিশুদের চিপস দিয়ে আকৃষ্ট করে এই হামলা চালানো হয়েছে সিরিয়ায়। শনিবারের এই বোমা হামলায় নিহত ১২৬ জনের ৬৮ জনই শিশু। এ যেনো শিশু হত্যার এক ‘মহাউৎসব’।
সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার সময় আলেপ্পা শহরে বাসের বহরে আঘাত হানে বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বাসের বহর থামলে ভয়াবহ বিস্ফোরণটি ঘটে। কাতার ও ইরানের মধ্যস্থতায় দামেস্কের কাছের সরকার নিয়ন্ত্রিত ২টি ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ২টি শহরে আটকে পড়া প্রায় ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদে বের করে নেয়ার সময় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
বিবিসির মধ্য প্রাচ্য প্রতিনিধি লিনা সিনজাব জানান, খাবার ভর্তি একটি গাড়ি সেখানে এসে শিশুদের মাঝে চিপস বিতরণ শুরু করে তাদের আকৃষ্ট করে এবং পরেই তা বিস্ফোরিত হয়। সরকারের অনুমতি ছাড়া কিভাবে গাড়িটি সেখানে আসলো তা পরিষ্কার নয় বলেও জানান তিনি।
সাধারণ সিরিয়সহ শিশুদের জন্যও যে পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে এমন বার্তা দিয়েছিলো ইউনিসেফ। চলতি বছরের মার্চে সিরিয়ার শিশুদের জন্য ২০১৬ সালকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট বছর বলে ঘোষণা করে ইউনিসেফ। সেই বছর ৬০৫ জন শিশু নিহত হয়। যা এর আগের বছরের (২০১৫) চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি।
এছাড়াও রাজধানী দামাস্কাসেও বোমা বর্ষণে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই শিশু। কমপক্ষে তিনটি গোলা সেন্ট্রাল উমায়াদ স্কোয়ারে আঘাত হানে বলে জানায় রাষ্ট্র ও সরকার সমর্থক মিডিয়া। রাষ্ট্রীয় টিভি এর জন্য ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেছে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সিরিয়ান মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ গ্রুপ জানিয়েছে কমপক্ষে ১০৯ জন শনিবারের হামলায় নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাহায্য কর্মী ও বিদ্রোহী সেনারাও রয়েছে। সেই হামলায় আরও অনেকেই আহত হয়েছেন বলে জানায় গ্রুপটি।
তবে সেই হামলার দায় এখনও কেউ শিকার করেনি। তবে সরকার বিদ্রোহীদের দায়ী করে যে বক্তব্য দিচ্ছে তারও কোন প্রমাণ নেই। কারণ সেই হামলা বিদ্রোহীদের স্বার্থ রক্ষা করে না। বিদ্রোহীরাও তাদের সমর্থকদের অন্য শহর থেকে সরিয়ে নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলো।
পরে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহর থেকে আটকে পড়াদের সরিয়ে নেওয়ার সময় আর হামলার ঘটনা ঘটেনি।
গত বছরের ডিসেম্বরেও আটকে পড়াদের সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।