আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপ অভিমুখী শরণার্থীদের সঙ্গে অমানবিক ও পাশবিক আচরণ করছে গ্রিসের পুলিশ ও কোস্টগার্ড। কখনো অভিবাসী বোঝাই নৌকা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে।
আবার কখনও নৌকাগুলো ডুবিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। চলতি সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে এমনই একটি রোমহর্ষক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গ্রিক উপকূলের কাছে সাগরের মাঝে শরণার্থী বোঝাই একটি ডিঙ্গিনৌকা ডুবিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা।
এ সময় নৌকা লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু গুলি ছুড়তেও দেখা যায়। যদিও গুলিগুলো নৌকায় না লেগে কাছাকাছি পানিতে পড়ে। রোববার তুর্কি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য প্রকাশ করে।
এদিকে শরণার্থী সমস্যা মোকাবেলায় সহযোগিতা না পেলে ইউরোপে লাখ লাখ শরণার্থী ঢুকিয়ে দেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
সিরিয়া যুদ্ধের কারণে তুরস্কের সীমান্তে ক্রমেই বাড়ছে শরণার্থীর চাপ। সেই চাপ সামলাতে না পেরে গত শুক্রবার সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেয় তুরস্ক সরকার। ফলে ফের শরণার্থী সংকটের মুখে পড়েছে ইউরোপ।
২৪ ঘণ্টায় তুরস্কের স্থলসীমান্ত দিয়ে প্রায় ১০ হাজার শরণার্থী গ্রিস সীমান্তে জড়ো হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সংখ্যা ৭৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
এরই মধ্যে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শিগগিরই লাখ লাখ শরণার্থী ইউরোপের দিকে যাত্রা শুরু করবে।
অভিবাসী ও শরণার্থীরা যেন তুরস্ক হয়ে ইউরোপের দিকে যেতে না পারে সেজন্য ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের করা চুক্তি তুরস্ক আর বাস্তবায়ন করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।
গ্রিস সীমান্তে এরই মধ্যে অভিবাসীদের ঢল নেমেছে। কিন্তু তাদের প্রবেশ রুখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে গ্রিস সরকার। সীমান্তে শত শত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হাজারো অভিবাসীকে আটকাতে সীমান্তে টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করছে গ্রিক পুলিশ। ঢালাওভাবে আটকও করা হচ্ছে শরণার্থীদের। গ্রিস এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের জরুরি সাহায্য চেয়েছে।
টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে এরদোগান হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, তার দেশে যদি নতুন করে সিরিয়ান শরণার্থীদের ঢল নামে, সেটা তারা সামলাতে পারবেন না। এরই মধ্যে প্রায় ১০ লাখ সিরিয়ান ইদলিব থেকে তুরস্ক সীমান্তে পালিয়ে এসেছে। ইদলিবে তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান বিদ্রোহীদের সঙ্গে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে।