দেশের খবর: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেছেন, ‘দেশে নাজিরশাইল বলে কোনো ধান নেই, মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই। এগুলো সবই ব্যবসায়ীদের কারসাজি।’
তিনি বলেন, আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে যতটা হুলুস্থুল তৈরি করছি এবং সচেতনতা তৈরির জন্য যে প্রচারণা চালাচ্ছি, নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রে অনুরূপ হুলুস্থুল করলে নিরাপদ খাদ্য পাওয়া সম্ভব হবে।
শনিবার ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত ‘সেফ ফুড ফর অল : এ কমিটমেন্ট টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন রশিদ।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যারা খাদ্যে ভেজাল দেবে তাদের শাস্তি নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড। আজ এত বছর পর এসে মানুষকে শিক্ষা দিতে হয় যে, ভেজাল খাওয়া যাবে না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যে কৃষক ফসল ফলায় সে কি অপরাধ করেন? অপরাধ করেন যারা প্রসেসিং করেন এবং এর মধ্যে যারা ব্যবসা করেন। আমাদের দেশের অনেকে ৭/৮শ’ টাকা দিয়ে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার জুস কেনেন। কিন্তু আমাদের দেশের জুসকে বিশ্বাস করেন না। যারা জুস তৈরি করেন তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, খাদ্যে ভেজালের জন্য শুধু সরকারকে দোষারোপ করলে হবে না। এজন্য সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। বিভাগ থেকে শুরু করে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যন্ত ভেজাল-কে না বলতে হবে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে যে মিষ্টি-কে আমরা এক নম্বর মিষ্টি বলে জানি সেই মিষ্টির কোনো গ্রেড নেই। যেখানে এ মিষ্টি তৈরি হয়, তা যদি একবার কেউ দেখতো তা হলে জীবনেও সে ওই মিষ্টি খেত না। তাকে একাধিকবার জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আটটি বিভাগে আধুনিক ল্যাবরেটরি করছি। খুব শিগগিরই আমরা এসব ল্যাবরেটরিতে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। এছাড়া ভেজাল, সন্ত্রাস ও মাদক সম্পর্কে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের বক্তব্য দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাঙ্গার ফ্রি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান। সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন কেআইবি’র সেক্রেটারি জেনারেল কৃষিবিদ খায়রুল আলম প্রিন্স, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এম আনোয়ার ফারুক, নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিন মিয়াজী ও এসিআই এগ্রি বিজনেসের সিইও ড. এফএইচ আনসারী।