দেশের খবর: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বেড়ে যাওয়ায় সংবিধানের ১৪১ (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার অনুরোধ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন এবং অ্যাডভোকেট মো. জোবায়দুর রহমান আবেদনটি করেন।
তাদের আবেদনে বলা হয়, ‘‘করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করা হয়েছে। এটি অতিমাত্রায় সংক্রামক। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ এবং আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় নয় হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করেছেন। উন্নত দেশসমূহ এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, স্পেন, কানাডা ও বেলজিয়াম জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশও এই সংক্রামক ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত নয়। এ পর্যন্ত ১৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং আক্রান্তদের মধ্যে থেকে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছে। সেই সাথে হাজার হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে।’’ ‘‘এছাড়াও সরকার বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই নিয়ম না মেনে জনসম্মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রিপোর্ট আসছে নিয়ম না মানার কারণে এই ভাইরাস এখন লোকাল কমিউনিটিতে সংক্রমিত হচ্ছে। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় করোনা আতঙ্কে স্থানীয় লোকজন বিদেশ ফেরত লোকদের বাড়িঘর ঘেরাও করছে। কর্তৃপক্ষ ৩০ জন বিদেশ ফেরত বিচারক এবং ৪ জন ডাক্তারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়েছে।’’
ওই আবেদনে আরও বলা হয়, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সভা, সমাবেশ ও মাহফিল অব্যাহত আছে। অন্যদিকে, করোনা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সর্বোপরি দেশ ও জাতি একটি অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাহীনতা এবং সংকটের দিকে ধাবিত হতে চলেছে। বিদেশি ক্রেতারা পোশাক খাতের ক্রয় আদেশ বাতিল করছে এবং অর্থনীতির সূচক নিম্নমুখী হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের হিউম্যান বায়ো সিকিউরিটি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চরম হুমকির সম্মুখীন। তাই এইরূপ পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হলে দেশ ও জাতি আসন্ন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে।’’
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন ৩ ব্যক্তি। গতকালকের আগ পর্যন্ত ১৪ জনের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়ার যায়। যাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়।
আজ বৃহস্পতিবার নতুন করে আরও ৩ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর)।