রাজনীতির খবর: দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ পাঁচ উপনির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দেশের আদালতগুলো ‘যতদিন প্রয়োজন’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে দলটি।
করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার বিকালে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এসব দাবি তুলে ধরেন।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভাইরাসের সংক্রামকদের চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্ধারণ, সংক্রামক শনাক্তকরণসহ চিকিৎসক-নার্সদের প্রয়োজনীয় পোশাক (পিপিই) ও যন্ত্রপাতি কোনো কিছু সরকার ব্যবস্থা করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের আতংকের কারণে জনগণের কাছ থেকে, বিভিন্ন জায়গা থেকে ইতিমধ্যে নির্বাচন বন্ধ করার কথা এসেছে। কিন্ত নির্বাচন কমিশন বলছে, ২১ তারিখে যে নির্বাচনগুলো আছে তা হবেই এবং ২৯ তারিখের নির্বাচনের ব্যাপারে ২১ তারিখ সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আহবান জানাচ্ছি, কমিশন তাদের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করে জনগণের স্বার্থে, মানুষের বেঁচে থাকার স্বার্থে এই নির্বাচনগুলোকে আপাতত স্থগিত রাখবেন। পরবর্তীতে নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করা যেতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আদালতগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের ভিড় হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলায় যারা আসামি তাদের আসতে হয়, হাজিরা দিতে হয়। প্রায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সেখানে উপস্থিত হন। ৩০ জন বিচারক ইতিমধ্যে কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন। ৩০ জন বিচারক যদি কোয়ারেন্টাইনে যান, সেক্ষেত্রে এটা পরিষ্কার আদালতগুলো এই ভাইরাসের সংক্রমনটা বেশি হচ্ছে।’
‘আমরা সেই কারণে আহ্বান জানাচ্ছি, এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে, জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে, তাদের জীবনের কথা চিন্তা করে আদালতগুলো আপাতত কিছু দিন বন্ধ রাখা প্রয়োজন। আমাদের আহ্বান থাকবে, আদালতের কার্যক্রম স্থগিত রাখা। আমরা আশা করব, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা দেশের কথা চিন্তা করে, জনগণের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, প্রথম থেকেই সরকার এই করোনাভাইরাসের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। আমরা প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম যে, এখানে দায়িত্বহীনতা পরিচয় দিচ্ছে সরকার। আমরা বলেছিলাম, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করুন। তারা বন্ধ করেননি। পরে ১৬ তারিখে তারা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী বলেছেন যে, প্রয়োজন হলে সব শাটডাউন করা হবে, যা যা দরকার সব বন্ধ করা হবে’। এখন তো শাটডাউন করার জায়গাটা অলরেডি তো এসে গেছে। কারণ শাটডাউন না করলে যেভাবে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে- তা ভয়াবহ মহামারী আকার ধারণ করবে।
‘বাংলাদেশ এমনিতেই একটা ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এদেশে এই ধরনের একটা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে, এখন এটা বাইরের থেকে আসার দরকার হবে না, এটা দেশের অভ্যন্তরে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্বারা সব জায়গায় ছড়াবে।’