আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে একসঙ্গে প্রার্থনায় বসেছিলেন ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মের নেতারা। সেমেটিক এ তিন ধর্মাবলম্বীরা জেরুজালেমকে পবিত্র শহর হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই সম্মিলিত প্রার্থনা হয়েছে। জেরুজালেমের সিটি হলে হওয়া এ প্রার্থনায় তিন ধর্মের নেতারা ছাড়াও দ্রুজ ও বাহাইদের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।-খবর ভ্যাটিকান নিউজের
কোভিড-১৯ নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক চলছে। সারা দুনিয়ায় উদ্বেগের মধ্যেই শহরটির মেয়র এ মিলিত প্রার্থনার উদ্যোগ নেন।
প্রার্থনার আগে ভ্যাটিকান রেডিওতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিন ধর্মের আত্মিক বন্ধনের গুরুত্ব তুলে ধরেন ফ্রান্সিসকান কাস্টোডিয়ান অব দ্য হোলি ল্যান্ড ফাদার ফ্রান্সেসকো প্যাটন।
তিনি বলেন, মহামারি ঠেকাতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে আমরা একসঙ্গে প্রার্থনা করবো। আমাদের ধর্মবিশ্বাসের উৎস এক, এ কারণে এ ধরনের প্রার্থনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
‘একই উৎসকে ধন্যবাদ জানিয়েই নিজেদের বিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে আমরা ঈশ্বর ও সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করবো।’
এর আগে গত ২১ মার্চ চার্চ অব দ্য হোলি সেপুলক্রের নেতারা (লাতিন, গ্রিক অর্থোডক্স ও আর্মেনিয়ান) এক যৌথ বিবৃতিতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় একসঙ্গে প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তারা বলেন, বিপজ্জনক এ পরিস্থিতিতে ইব্রাহিমের সন্তানরা একসঙ্গে প্রার্থনা করে সর্বশক্তিমানের কাছে ক্ষমা ও সুরক্ষা চাইতে পারে।
চীনের উহান থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও সে দেশে ভাইরাসটির প্রকোপ কমছে। ইউরোপে রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে ভাইরাসটি।
এদিকে বিশ্বে শনিবার পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এর বেশির ভাগ মৃত্যু হয়েছে ইটালি ও স্পেনে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।
এদের মধ্যে মারা গেছেন ২৭ হাজার ৩৬০ জন। আর চিকিৎসা নিয়ে সেরে উঠেছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৯৮ জন।
বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট ১ লাখের বেশি জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৭০৬ জনের।
তবে মৃতের হিসেবে শীর্ষে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার ১৩৪। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৪৯৮ জন।
মৃতের হিসাবে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ১৩৮। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৭১৯।