নজরুল ইসলাম রাজু : স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা দিয়েছিলেন রক্ত। দিয়েছিলেন জীবন। পাকহানাদার বাহিনী নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছিলো ৭৯ জন নিরস্ত্র বাঙালিকে। হত্যার পর তাদেরকে একই কবরে মাটি চাপা দিয়েছিলো হানাদাররা। কালের সাক্ষী বাঙালি জাতির অমর স্মৃতি পাটকেলঘাটার পারকুমিরা গণকবরটি আজও অরক্ষিত রয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল শুক্রবার। পাকহানাদার বাহিনী নির্মম নির্যাতন চালিয়ে একসাথে ৭৯ জন নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করেছিলো সেদিন। ইতিমধ্যে স্বাধীনতা অর্জনের ৪৬ বছর পদার্পণ করেছে। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের অমর স্মৃতি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা হয়নি আজও। অরক্ষিত রয়ে গেছে পারকুমিরার গণকবরটি। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর নির্যাতনের কথা আজও আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মুখে মুখে। যে উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, সে উদ্দেশ্য আজ সফলতার মুখ দেখছে। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি রাজাকার গোষ্ঠী বাংলার মাটি থেকে অনেকটাই আজ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বা যাচ্ছে। আজ ৭১-এর রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের সূর্যসন্তান হিসেবে বর্তমান প্রজন্ম গর্বিতভাবে সম্মান করে। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। তবে তপ্ত বুলেটের আঘাতে রক্তে লটিত শহিদদের স্মৃতি কেন রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না এটি সাধারণ জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, স্বাধীনতা যুদ্ধে ৭৯ শহিদের গণকবর রক্ষণাবেক্ষণ না হলে ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে জায়গাটি। তবে ১৯৯২ সালে ২৪ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বধ্যভূমিতে পা রেখে শহিদদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা শেষে একটি স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন। সেই ফলকটিও আজ বিবর্ণ হয়ে অনেকটাই বিলীনের পথে। তালা উপজেলা মক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মফিজউদ্দীন জানান, পাকহানাদার বাহিনী পরিকল্পিত ভাবে হামলা করে ৭৯ জনকে গণহত্যা করে। তাদের গণকবরটি আজও রক্ষিত হয়নি। তবে সম্প্রতি ঢাকায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হয়েছে। তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম জানান, তার বাবা ও বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল পরিকল্পিত ভাবে তার বাবা-ভাই ও চাচা-চাচাতো ভাই ৭৯ জন নিরস্ত্র বাঙালিকে পারকুমিরায় হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সস্তান হিসেবে গণকবরটি রক্ষণাবেক্ষণে আন্তরিকতার অভাব নেই। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দপ্তরের আওতায় (এলজিইডি) প্রায় কোটি টাকা মূল্যে স্মৃতিসৌধের অনুমোদন হলেও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে টাকা না থাকায় বাস্তবায়নে হচ্ছে না। মুক্তিযোদ্ধা পুত্র শেখ টিপু সুলতান বলেন, আমার আব্বা শেখ হায়দার আলীকে গাছের সাথে বেধে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।