সাতক্ষীরা

করোনা ভাইরাসে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে

By daily satkhira

April 07, 2020

করোনা ভাইরাস নিয়ে সব চাইতে বিপদে আছে সাতক্ষীরা জেলার শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক মিলে জেলার কয়েকলক্ষ মানুষ আজ সম্পূর্ণ বেকার জীবন-যাপন করছে। জেলার একমাত্র ভারী রাষ্ট্রায়াত্ত্ব শিল্পপ্রতিষ্ঠান সুন্দরবন টেক্সটাইলস মিল কয়েক বছর যাবত সম্পূর্ণ বন্ধ অবস্থায় আছে। মিলের আশে পাশের গ্রামগুলো যেমন তালতলা,গোপীনাথপুর, বিনেরপোতা, বসুন্ধারা,খেজুরডাঙ্গী, খেলারডাঙ্গী, রাজনগর, শিবনগর, কৈখালী, মাগুরা, ফুলবাড়ী, থানাঘাটা, নলকুড়া, লাবসা, উত্তরকাটিয়া মাঠপাড়া এবং তালার নগরঘাটা, পাঁচপাড়া, সেনেরগাতী, সরুলিয়া, তৈলকুপ, বাইগুনি, চৌগাছা, কাশিপুর, মির্জাপুর, কুমিরা এলাকা থেকে তারা টেক্সটাইলস মিলে চাকুরি করত। টেক্সটাইলস মিল বন্ধ হওয়ার পর পেশা হিসেবে এই সমস্ত শ্রমিক কর্মচারীগণ ছোট দোকান, ভাড়াই চালিত মটরসাইকেল, ইজিবাইক, ব্যাটারীভ্যান, ছোট খাটো ব্যবসা, কৃষি কাজ নিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তাদের সংখ্যা প্রায় এক হাজার পরিবার। জেলা সদরে বাসটার্মিনালে মটর শ্রমিক ইউনিয়ন, নারকেলতালা ট্রাক ইউনিয়ন, ইটাগাছা ট্রাক ইউনিয়ন(বর্তমানে আলীপুরে অবস্থিত), হ্যান্ডলিং শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, ইমারত ও নির্মাণ শ্রমিক, ইটভাটা শ্রমিক, দোকান কর্মচারী, মৎস্যসেট শ্রমিক, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, লেগুনা শ্রমিক, ফুটপাতের হকার, ফেরিওয়ালা, ওয়ার্কশপ অটোমোবাইল শ্রমিক, সর্বপরি ভোমরাস্থল বন্দরে ৪টি ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক কর্মচারীবৃন্দ। এরা সবাই আজ বেকার। পরিবহন মালিকগণ আরো বেশি বিপদে। যে সমস্ত মালিক ৫লক্ষ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে একটি ট্রাক কিনেছেন। তাদের ৬০ হাজার টাকা মাসিক কিস্তি গুনতে হবে। ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির। দেশে করোনা ভাইরাসের রোগি ৮ মার্চ সনাক্ত হওয়ার পর ৩০ দিন হতে চলল। সামনে আরো ২০/২৫ দিন পর বোঝা যাবে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিবে। শবে বরাতের রাতে আল্লাহর কাছে করুনা ভিক্ষা ছাড়া এই অসহায় দরিদ্র মানুষগুলোর কি বা করার আছে। এই মূহুর্তে গণ মানুষের এ দাবি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আমাদের সামনে থাকুক। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাজ তারা সার্কিট হাউজে অবস্থান করে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করুক। স্যাটালাইন টেলিভশনে বার বার ডিসি-এসপির চেহারা না দেখিয়ে ৪জন এমপি, ৭জন উপজেলা চেয়ারম্যান ও ২জন মেয়র তাদের ভোটারদেরকে আশ^াস্ত করুক। জেলার সকল মানুষকে সেফটিনেটের আওতায় আনা হোক। জেলায় জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের সাথে জেলা ১৪ দল ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল রাজনৈতিকদলকে এই কাজে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। এই মুহুর্তে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের দিকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাকিয়ে আছে। ১২ ডিসেম্বর ১৯ জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলের পর বর্তমান ২ জনের জেলা কমিটি। জেলা শহরে বসবাসরত সাবেক নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কর্মপরিকল্পনা করা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের মত একটি বীগ বাজেটের খেলার আয়োজন করতে পারে। তাহলে আমার বিশ^াস বিচক্ষণ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামীলীগের একটি ত্রাণ কমিটি গঠন করে সাধারণ মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন। সরকার যে অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন এবং ব্যবহার নিশ্চিত করণে আমলাদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের যথাযথভাবে তদারকি করা দরকার। কেন না ভবিষ্যত মানুষের কাছে ভোট চাইতে জনপ্রতিনিধিদের যেতে হবে। এই মুহুর্তে ৭৮টি ইউনিয়ন পরিষদ অফিস ও দুটি পৌরসভার অফিসগুলোকে কেন্দ্র করে সকল সেবা সমন্বয় করা যেতে পারে। সরকার প্রদত্ত ১০ কেজি মূল্যের চাউল পর্যাপ্ত পরিমান দেওয়া হোক ইরিধান না ওঠা পর্যন্ত। কোল্ড স্টোর থেকে পাইকারি দরে আলু কিনে প্রতি ইউনিয়নে ১০ মে:টন কেজি প্রতি ১০ টাকা ভুত্তুর্কি মূল্যে আলু দেওয়া যেতে পারে। এই ভুত্তুর্কির টাকা সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হোক। গাবুরা, পদ্মপুকুরের মত প্রত্যান্ত এলাকায় পৌছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এব্যাপারে ট্রাক মালিক ও শ্রমিকদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। সর্বপরি প্রতিটি শ্রমজীবি পরিবারকে এককালিন নগদ পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

লেখক: শেখ হারুন উর রশিদ ট্রেড ইউনিয়ন ও রাজনৈতিক কর্মী ০১৭১০ ৮৪৯৩৫৩