নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনির গদাইপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দু’ গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনার দশ দিন অতিবাহিত হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতংক কাটছেনা। প্রতিরাতে চেয়ারম্যান ডালিমসহ তার কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘর ভাংচুর, হাঁস,মুরগী, গরু, ছাগল ধরে নিয়ে যাওয়া ও ধানসহ জিনিসপত্র লুটপাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে ডালিম সমর্থক গদাইপুর গ্রামের লম্বা খোকনের ১২টি গরু,মুক্তিযোদ্ধা নুরুল শেখের একটি মোটরসাইকেল ও ৩টি গরু , মনোগফ্ফর মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, বাচ্চুর বাড়িঘর ভাংচুর , ছোটনুনু মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, জামারুল ইসলামের ধান, সিরাজুল মোল্যার জুতা ও কাপড়ের দোকান লুট, মোহম্মদ পুলিশের-দোকান ভাংচুর ও লুট, নুর ইসলাম মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, মোস্তাকিম মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর ও লুট,আনারুল মোল্যার ৩টি গরু,ঘরবাড়ি ভাংচুর,মহিদুল্লাহ মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর,সাইফুল মোল্যার বাড়িঘর ভাংচুর, কামরুল ইসলামের বাড়িঘর ভাংচুর, জামসেরের বাড়িঘর ভাংচুর, শেখ কামরুল ইসলামের দোকান ভাংচুর ও লুট,তুহিন সরদারের ২টি গরু,শফিকুল সরদারের নগত ২৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।এছাড়া আব্দুল সালাম, ওয়েজ কুরুনী,সিরাজুল ইসলাম,সেলিম ও রাব্বি। সকলের বাড়ি ভাংচুর ও মালামাল লুট করা হয়েছে। এদিকে, নিহত সরবত মোল্যার ছেলে সবুজ মোল¬্যা বাদি হয়ে গত শনিবার আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমকে প্রধান আসামী করে ৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। ইতিমধ্যে এ মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরদিকে চেয়ারম্যান ডালিমের ভাই ওবায়দুল্লাহ ডাবলু বাদি হয়ে তার ভাই টগরকে মারপিট, ভাংচুরের অভিযোগে সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দস ও অহিদসহ ৬১ জনকে আসামী করে পৃথক দুটি মামলা এবং মুক্তিযোদ্ধা নুরুল শেখের স্ত্রী জামিলা খাতুন বাদি হয়ে ২০ জনকে আসামী করে আরও একটি মামলা করে। জামিলা খাতুনের মামলায় ২০নং আসামী মেম্বর আরিফ বিল্লাহকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও কোর্ট থেকে জামিন লাভ করে। চেয়ারম্যান ডালিমের স্ত্রী আঁখি জানান, হত্যা ও নাশকতাসহ একাধিক মামলার আসামী সরবত মোল্যা মারা যাওয়ার পর তার (আঁখির) বাড়িসহ বাড়িতে থাকা ৫টি মোটর সাইকেল ও মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়। এছাড়া নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও দলিলসহ সকল মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এঘটনার ১০দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কোন মালামাল উদ্ধার বা কোন আসামী গ্রেপ্তার হয়নি। ফলে রাত এলে চরম আতংকে থাকতে হয় আমাদের। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন সকাল ও রাতে তুয়ারডাঙ্গা মৎস্য সেট এলাকায় বসে নতুন নতুন লুটের পরিকল্পনা করছে তারা। এখনও তাদের মহড়া অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি আরো জানান। চেয়ারম্যানের ভাইয়ের স্ত্রী মাসুমা আক্তার জানান, তার পুত্র কাইয়ুম সরদার গদাইপুর জেহের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। তার বয়স ১৪ বছর। কিন্তু তার বয়স ১৯ বছর দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশের উর্দ্ধতন মহলে জানানো হয়েছে। আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ৪টি মামলা হয়েছে। এখন সেখানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।