সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা কালেক্টরেট ভবন(ডিসি বিল্ডিং)-এ নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত আনসার বাহিনীর একজন নায়েককে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় প্রকাশ্যে পিস্তল উচিয়ে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি) এর এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুর ১২ টার পর দিকে সাতক্ষীরা কালক্টরেট বিল্ডিং এর নিচতলায় বিআরটিএর ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন রুম ও লাইসেন্স ডেলিভারি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম শাহিনুর রহমান। আনসার নায়েকের নাম সহিদুল ইসলাম। নায়েক সহিদুল ইসলাম ও ল্যান্স নায়েক মতিয়ার রহমান জানান, তারা রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বিআরটিএ- এর ফিঙ্গার প্রিন্ট রুম এরিয়ায় ডিউটি করছিলেন। এমন সময় সেখানে শাহিনুর রহমান অপেক্ষমানদের সাথে লাইনে না দাঁড়িয়ে জোর করে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে সেখানে দায়িত্বরত আনসারের ল্যান্স নায়েক মতিয়ার রহমান তাকে লাইনে দাঁড়াতে বলেন। এসময় এসআই শাহিনুর রহমান তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ফেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কর্তব্যরত আনসারের নায়েক সহিদুল ইসলাম শাহিনুর রহমানকে ভেতরে ঢুকতে নিষেধ করলে তিনি সহিদুল ইসলামে ।কথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কথাকাটির এক পর্যায়ে এসআই শাহিনুর উপস্থিত সকলের সামনে পিস্তল উঁচিয়ে সহিদুল ইসলামকে বলেন, “আমাকে চিনিস? আমি ডিবির এসআই শাহিন। আমার কান্দার কেউ নেই। তোর এতবড় সাহস আমাকে লাইনে দাঁড়াতে বলিস। আমি দেখে নেব তুই কিভাবে সাতক্ষীরায় চাকরি করিস।” এসময় উপস্থিত অপেক্ষমান সেবাগ্রহীতারা ‘হৈ হৈ’ করে উঠলে শাহিনুর রহমান পিস্তল নামিয়ে ফেলেন এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলে জানান নায়েক সহিদুর রহমান। সহিদুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান নিশ্চিত করে বলেন, এসময় এসআই শাহিনের পরনে কোন ইউনিফর্ম বা জ্যাকেট(গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ পোশাক) ছিল না। তিনি আরও জানান, এ ঘটনা কালেকক্টরেট ভবনের অন্যান্যদের কানে তাৎক্ষণিক ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার পরপরই সাতক্ষীরা কালেক্টরেটের একজন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত অপেক্ষমান সেবাগ্রহীতা ও দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ঘটনার প্রাথমিক বিবরণী শোনেন এবং লিপিবদ্ধ করেন। এসময় নায়েক সহিদুল ইসলাম বর্ণিত লিখিত বিবরণীতে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ঘটনার ৯জন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষর করেন। ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোমবার দুপুরে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করনে।
লিখিত বিবরণীতে পিস্তল উচিয়ে দায়িত্বরত আনসারের নায়েককে হুমকি দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে বলেও জানিয়েছেন নায়েক সহিদুল ইসলাম। এদিকে, পরদিন ঘটনাটি সাংবাদিদের কানে পৌছলে এসআই শাহিনুর রহমান সোমবার বিকাল ৪.৩০টার দিকে জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো: মহিউদ্দীনের শরণাপন্ন হলে জেলা প্রশাসক উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন।এ সময় তিনি তাদেরকে দৈর্য এবং সংযম প্রদর্শনের জন্য বলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মোঃ মহিউদ্দীন বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। যাকে সরকার যতটা ক্ষমতা দিয়েছে তাকে ততটা ধৈর্যশীল হতে হবে। এসআই শাহিন আমার নিকট এসেছিলেন। আমি উভয় পক্ষের কাছ থেকে ঘটনা শুনে তাদের যতটুকু বলার বলেছি।” অন্যদিকে এসআই শাহিনুর রহমান পিস্তল উচিয়ে হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “আমি যেহেতু লাইনে না দাঁড়িয়ে ফিতরে ঢুকতে গিয়েছিলাম তাই ক্ষুব্ধ হয়ে উপস্থিত কেউ কেউ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে। আসছে ঘটনাটি তুচ্ছ কথা কাটাকাটি ছাড়া কিছুই নয়। ডিসি স্যার সব ঠিক করে দিয়েছেন।” ওই সময় তিনি ডিউটিতে ছিলেন কিনা জানতে চাইলে শাহিনুর দাবি করেন তিনি ডিউটিতে ছিলেন।