নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে জরুরি ভিত্তিতে করোনা টেস্টের পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি প্রেরণ করেছেন সাতক্ষীরা -১(তালা-কলারোয়া) আসনের সাংসদ ও সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। ২৬ এপ্রিল এ পত্র প্রেরণ করেন তিনি। পত্রে এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি উল্লেখ করেছেন, ০১ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১১ হাজার মানুষ সাতক্ষীরায় এসেছিলো। ১১ হাজার মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার চেষ্টা হয়েছিল ফলে ওই সকল প্রবাসী দ্বারা কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন জেলা থেকে সড়ক ও নৌপথে ২ হাজার এর বেশি শ্রমজীবী ওই সকল জেলার লকডাউন উপেক্ষা করে সাতক্ষীরা জেলায় ফিরে এসেছে এবং করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন জেলা থেকে সাতক্ষীরায় আসা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ জেলায় ফিরে আসাতে জেলাবাসী শঙ্কিত। সাতক্ষীরা জেলায় এখনও পর্যন্ত কোন করোনা রোগী সনাক্ত হয়নি। কিন্তু করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ আসার ফলে এখানে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি প্রবল। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসে করোনা সনাক্তকরণ কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং সনাক্তকৃত রোগীদের আইসোলেসনে রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এ সকল ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন ২৭০ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলেও মাত্র ১০৮ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। এ মুহুর্তে আক্রান্ত জেলা থেকে আহত ২০ হাজার শ্রমজীবী মানুষের করোনা সনাক্ত করা জরুরী হয়ে পড়েছে। প্রায়ই বিভিন্ন উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে যা জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারও করা হচ্ছে কিন্তু মৃত্যুর সংবাদ যথাসময়ে না পাওয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে সে সব পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হচ্ছে। গত ১৪/১৫ দিনে আক্রান্ত জেলা থেকে আগত শ্রমজীবী মানুষের করোনা পরীক্ষা দ্রুত সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হলে সংক্রমনের ঝুঁকি হ্রাস পাবে এবং আক্রান্ত হলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা জেলায় ২০০৮ সাথে ৫শ শয্যার একটি স্বতন্ত্র আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। ভেন্টিলেশনসহ এখানে ৮টি সচল আইসিইউ ইউনিট আছে। এখানে পিসিআর মেশিন স্থাপনের বায়োসেফটি রুমসহ সকল সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান এবং এ হাসপাতালটি শুধুমাত্র করোনা রোগী চিকিৎসার জন্য সুনির্দিষ্ট করে রাখা রয়েছে। তাই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করে করোনা আক্রান্ত মানুষকে দ্রুত চিহ্নিত পূর্বক সেবা দান ত্বরান্বিত করতে পারলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস এবং রোধ করা সম্ভব হবে। পত্র প্রেরণের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা অত্যান্ত জরুরি। সাতক্ষীরার মানুষকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করতে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন এবং দ্রুত সেটি বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন। এদিকে গত কয়েকদিনে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে সর্দি জ¦রে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গত ৫ দিন পূর্বে ঢাকা থেকে আসা কালিগঞ্জের হারুন অর রশিদ সুমনের মৃত্যু হয়েছে ২৪ এপ্রিল সকালে। সুমনের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাড়ির পাশের ৬ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তার মৃত্যু নিয়ে আতংক বিরাজ করছে সাতক্ষীরায়।