নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুরে ভূয়া দলিল সৃষ্টি করে সংখ্যালঘু পরিচয়ে এক হুন্ডি ব্যবসায়ী কর্তৃক দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় পৈত্রিক সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার উমরাপাড়া গ্রামের হাজী সোলাইমান গাজীর ছেলে মোঃ আজিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমাদের ফুফুদ্বয় মোছাঃ আমেনা ও মোছাঃ জামেলা খাতুন বিগত ২০০০ সালের ১অক্টোবর আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে ওয়ারেশ সূত্রে তাদের জমির অংশ বুঝে নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু ২০১৪ সালের ২৮ এপ্রিল ৬৯৭০ নং দলিলে তাদের প্রাপ্য ব্রহ্মরাজপুর মৌজায় ৫১০৮ ও ৫১০৯ দাগের সমুদয় সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। একই মৌজার এস এ ৫৪৫ ও ডি,পি ৮৪৯ খতিয়ানের সাবেক ৬৫৬১ ও বর্তমান ৮৩৪৭ দাগে ১১৪ শতক, এস এ ১৮৭৪ ও ডি,পি ৮৪৯ খতিয়ানের সাবেক ৬৫৫৫ ও বর্তমান ৮৩৫৮ দাগে ৬০ শতক জমিসহ অন্যান্য জমি ১৯৮৩ সালে পাগল গাজী নিকট হতে দলিল মূলে প্রাপ্ত হয়ে ৫৯১/১ খারিজ খতিয়ান করিয়া খাজনাদি পরিশোধ করিয়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছি। সাবেক ৬৪০৮ ও হাল ৮০৭২ দাগে ১০৮ শতক জমিসহ তিনটি দাগের মোট ২ একর ৮২ শতক ভোগদখলীয় সম্পত্তির মধ্যে ৭২ শতক জমি আমাদের ফুফু আমেনা ও জামেলা খাতুন অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করেন। এঘটনায় আমরা সাতক্ষীরা যুগ্ম জেলা জজ ১নং আদালতে একটি মামলা দায়ের করি যা বিচারধীন আছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার ফুফু আমেনা ও জামেলা খাতুন গোপনে জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র সৃষ্টি করে উক্ত সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করলে আমরা বাধা দেই। কিন্তু উক্ত সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলমানের বিষয়টি অবগত হওয়ার পরও ব্রহ্মরাজপুর ঘোষপাড়া এলাকার মৃত. সাধন ঘোষের ছেলে এলাকার চিহিৃত হুন্ডি ব্যবসায়ী বিকাশ ঘোষ ও সত্য চরণ ঘোষ লোভের বশবর্তী হয়ে নামমাত্র মূল্যে ওই সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি দলিল করে নেয়। ভূয়া কাগজের বুনিয়াদে ওই সম্পত্তি ক্রয় করে বিকাশ ঘোষ পেশিশক্তির বলে তা দখল করতে না পেরে সংখ্যালঘুর দোহ্ইা দিয়ে অবৈধভাবে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। আজিজুল ইসলাম আরো বলেন, উক্ত সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে গত ২৮ এপ্রিল সুলতানপুর (বেনীখালী) গ্রামের হাজী আব্দুল মুজিদ ঢালীর ছেলে গোলাম মাওলা, মোহাম্মদ, আব্দুল মান্নান, ব্রহ্মরাজপুর গ্রামের মৃত ছমির উদ্দীন সরদারের ছেলে আব্দুল হাকিম, আব্দুল হান্নান, মৃত. সাধন (পেচু) ঘোষের ছেলে বিকাশ ঘোষ ও সত্যচরণ ঘোষ, মৃত, দুর্গাপদ ঘোষের ছেলে সুবীর ঘোষ, কালিপদ ঘোষের ছেলে সুশান্ত ঘোষ ও তাদের ভাড়াটিয়া চিহ্নিত ভূমিদস্যু রজব আলী কারিকরের ছেলে বারি ও মনিরুল সহ ১০/১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ বাহিনী ধারালো অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উল্লেখিত সম্পত্তিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করে। তারা এসময় আমার ভাই মেহেদী হাসানকে মারপিট করে গুরুত্বর আহত করে এবং সম্পত্তিতে থাকা ঘেরাবেড়া ভাংচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। তিনি বলেন, অবৈধভাবে উপার্জিত কালো টাকার মালিক বিকাশ ঘোষ ও সত্য চরণ ঘোষ টাকার প্রভাবে অন্যের ভোগদখীয় সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের চেষ্টা করে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করছেন। ২৯ এপ্রিল যে বক্তব্য তিনি উপস্থাপন করেছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যে, বনোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমার বাবা বৃদ্ধ মানুষ। তিনি গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় একরকম শয্যাশায়ী হয়ে আছেন। তিনি কিভাবে তার লাইসেন্সকৃত বন্ধুক দিয়ে হুমকি দিয়েছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। এছাড়া যুবলীগ নেতা মাহমুদ হোসেন লিটনসহ কয়েকজন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও মিথ্যেচার করেছেন তিনি। প্রকৃতপক্ষে তারাই দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমাদের পরিবারের কেউ কখনো জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলনা। আমি বিকাশ ঘোষের বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি তিনি সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে অন্যের জমি দখল চেষ্টাকারী বিকাশ ও সত্যচরণ ঘোষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।