আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটায় সঞ্জয় সরকার নামে এক এনজিও কর্মী করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে। তিনি নগরঘাটা ইউনিয়নের কাপাসডাঙ্গা গ্রামের প্রভাষ সরকারের ছেলে। তিনি সদরের বিনেরপোতায় ঋশিল্পী নামে একটি এনজিওর হ্যান্ডিক্রাফটস সেকশনের প্রোডাকশন ম্যানেজার বলে জানা গেছে। করোনার উপসর্গ থাকায় গত ২৮ এপ্রিল তালা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তার নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠায়। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট ইউনিট থেকে তার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে মর্মে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত। তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সরদার জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়িসহ তার আশে পাশের ১০ টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। টানানো হয়েছে লাল পতাকা। এছাড়া তার পরিবারের সকলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আপাতত ওই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হোমকোয়ারিন্টনে থাকবেন। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ তাকে দেখভাল করবেন। প্রসঙ্গত, এর আগে যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক মেডিকেল টেকনোশিয়ান তার কর্মস্থল থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরায় এসে শহরের উত্তর কাটিয়াস্থ ভাড়া বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন।
সাতক্ষীরা জেলার প্রথম COVID-19 Positive ( সাতক্ষীরা জেলা হতে নমুনা প্রেরণ বিবেচনায়) সঞ্জয় সরকার, ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল, গোপীনাথপুর, বিনেরপোতা, সাতক্ষীরায় প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানা যায়। চাকরির সুবাদে এবং অন্যান্য ভাবে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তার সংস্পর্শে আসেন বলে অনুসন্ধানে জানা যায়। এমতাবস্থায়, COVID-19 সংক্রমণ প্রতিরোধ কল্পে এবং এলাকাবাসীর সর্বোত্তম স্বার্থে ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানটি এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের বাড়ি আজ সকালে লকডাউন করা হয়। লকডাউন করার সময় আক্রান্ত ব্যক্তি সম্ভাব্য যাদের দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন, সে বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হয়। এভাবে, গোপীনাথপুর, রাজনগর এবং উত্তর কাঠিয়ার মোট সাতটি বাসা এবং প্রতিষ্ঠান লকডাউন করা হয়। এ সময় এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা, নিজ বাসায় অবস্থান করা এবং সাতক্ষীরা জেলা পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়।
ঋশিল্পী ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠান ছাড়াও যে সকল ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করা হয় তারা হলেন- দীপঙ্কর, গোপীনাথপুর, রোকনুজ্জামান, উত্তর কাটিয়া, ইব্রাহিম চৌধুরী, উত্তর কাটিয়া, দীপঙ্কর কুমার ঢালী, রাজনগর, তারক মাস্টার, রাজনগর, ইশরাত আরা, পিতা ইব্রাহিম চৌধুরী উত্তর কাটিয়া। এদিকে, সাতক্ষীরায় মোট ৩ হাজার ৬২৪৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে আরো ৩ হাজার ৫৫৭ জনকে। এছাড়া, এ জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর ও পিসিআরল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৯০ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ১৮৯ টি রিপোর্ট নেগেটিভ ও একটি পজিটিভ এসেছে।