অনলাইন ডেস্ক :দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস আরও দুজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭৭ জনে। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৬৬৫ জন। এতে দেশে ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল নয় হাজার ৪৫৫ জনে। রোববার (৩ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচ হাজার ২১৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগের কিছু মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৩৬৮টি। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮১ হাজার ৪৩৪টি। নতুন যাদের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাদের মধ্যে আরও ৬৬৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা। ফলে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার ৪৫৫ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও দুজন। এদের একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছর, অপরজন ষাটোর্ধ্ব। একজন নারায়ণগঞ্জের, অপরজন রংপুরের বাসিন্দা। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৭ জনে। আর এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৬৩ জন।
গত শনিবারের (২ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫২ জন। রোববারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন নেয়া হয়েছে ৬৫ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন এক হাজার ৬৩৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬০ জন। এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৮২ জন। রাজধানীসহ সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার ৬৩৮টি। তন্মধ্যে ঢাকায় তিন হাজার ৯৪৪টি এবং রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আছে পাঁচ হাজার ৬৯৪টি। হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে নয় হাজার ৮৭৪ জনকে। একই সময়ে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ১৪৯ জন। সব মিলিয়ে ছাড়া পেয়েছেন এক লাখ ৯২ হাজার ৫৯২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৭ হাজার ৭৩৯ জন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।
করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। তবে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস ক্রমে গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি। তবে সোয়া ১১ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। যদিও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় খুলেছে পোশাক কারখানা। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি-না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা।