নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় আন্দোলন সংগ্রামে নিহত ও আহতদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত ঈদ উপহারের অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, দেশব্যাপী সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে যে সকল নেতকার্মী খুন গুম হয়েছে অথবা নির্মমতার শিকার হয়েছে সে সব পরিবারে গত কয়েক বছর ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ওই সকল পরিবারে ধারাবাহিকভাবে ঈদ উপহার দিয়ে আসছেন। এবছরও ঈদের পূর্বে সাতক্ষীরা জেলার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে আর্থিক অনুদান বরাদ্দ করা হয়। ওই বরাদ্দ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে বন্টনের নির্দেশনা থাকলেও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ঐ বরাদ্দ গ্রহণ করে ওই নির্দেশনা অমান্য করে এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাথে কোন প্রকার আলোচনা না করে তার পছন্দের লোক দিয়ে উপহার সামগ্রি সংশ্লিষ্টদের নিকট পৌছে দিয়েছেন। যা উপহার সামগ্রী বন্টনের ক্ষেত্রে নিয়ম নীতির বিপরীতে স্বেচ্ছাচারিতার প্রকাশ। খোজ নিয়ে জানা গেছে ওই উপহার সামগ্রী কলারোয়ার তুলশীডাঙ্গা গ্রামের মকবুল হোসেনের পুত্র ময়জুদ্দিনকে প্রদান করা হয়েছে। অথচ ময়জুদ্দিন আন্দোলন সংগ্রামের কারনে নয় তিনি বিগত ২৬ বছর পূর্বে একটি পা হারিয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। এছাড়া উপহার বিতরণের সময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অনুপস্থিত ছিলেন। সাতক্ষীরার আগরদাড়ীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নিহত আনারুল ইসলামের ভাই জিয়ারুলের নিকট সাবেক সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে উপহার তুলে দেন তারিকুল হাসান। উপহার সামগ্রী বিতরণের সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককের অবহিত করা হয়নি। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হলেও নিজের বর্তমান পরিচয় গোপন রেখে সাবেক সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে জেলা বিএনপির অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছেন বলে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন। এদিকে আশাশুনি শ্রীউলা গ্রামে নিহত হাকিমের স্ত্রীর নিকট উপহার তুলে দিয়েছেন আইনুল ইসলাম নান্টা। এক্ষেত্রে আশাশুনি উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবহিত না করে উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে অপমানিত করা হয়েছে বলে তারা মনে করেন। অন্যদিকে তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী বিতরণে বড় অনিয়ম করেছে জেলা ছাত্রদল। কলারোয়া পৌরসভার অর্ন্তগত মুরারীকাটি গ্রামে জনৈক শাহীনকে এ উপহার দিয়েছে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সজিব ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন। কিন্তু উক্ত শাহীন আন্দোলন সংগ্রামে মাধবকাটি এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় পা হারিয়েছেন। এছাড়া গোবিন্দকাটি গ্রামের ইছারুলও সড়ক দুর্ঘটনার কারণে একটি পা’র স্বাভাবিকতা হারান তিনি পেয়েছেন ওই বরাদ্দ। এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. সৈয়দ ইফতেখার আলী বলেন, যেটা জেলা বিএনপির মাধ্যমে বন্টনের কথা রয়েছে সে বিষয়ে আমাদের কে কিছু জানানো হয়নি। সাবেক এমপি হাবিব সাহেব নিজে উত্তোলন করে আমাদের না জানিয়ে ইচ্ছামত বন্টন করেছে। এঘটনায় জেলার সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, নিদের্শনা জেলা বিএনপির মাধ্যমে বন্টনের কথা থাকলেও আমাদের কিছুই জানানো হয়নি এবং কিভাবে কাদের দিয়েছেন তা জানা নেই। উপহারপ্রাপ্ত ময়নুদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি বিগত ২৬ বছর পূর্বে দূর্ঘটনায় আহত হয়েছিলাম। সে সময় পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। ইছারুল ইসলাম এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে এবং শাহীনের মোবাইল ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করলে তারা একইভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন বলে জানান। এব্যাপারে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।