‘চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা’– বাংলা চলচ্চিত্রের ফ্যাশন আইকন অভিনেতা জাফর ইকবাল অভিনীত চলচ্চিত্রের একটি গান। চলচ্চিত্রে তাকে বলা হতো রাজপুত্তর, আবার কখনো কখনো রোমিও। তিনি একাধারে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, গায়ক, গিটারবাদক ও নায়ক।
পঁচিশ বছর হয়ে গেল বাংলা চলচ্চিত্রের এই ফ্যাশন আইকন চলে গেছেন। দুই দশকের বেশি সময় বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় ও গান দিয়ে মাতিয়ে রাখলেও অনেকটা নিভৃতেই কেটে যাচ্ছে তার মৃত্যুর এ দিনটি।
চিরসবুজ এই গায়ক ও নায়ক ১৯৯২ সালের ২৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৫০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পল্টনের বাসায় জন্ম তার।
গানের শিল্পী জাফর ইকবাল জাফর ইকবাল ছিলেন পরিপূর্ণ একজন নায়ক। তবে গানের চর্চাটা করতেন সেই শৈশব থেকেই। ১৯৬৬ সালে বন্ধু তোতা, মাহমুদ ও ফারুককে নিয়ে গঠন করেন ব্যান্ড গ্রুপ ‘রোলিং স্টোন’। এলভিস প্রিসলি ছিল তার প্রিয় তারকা। স্কুলে কোন ফাংশন হলে তিনি গিটার বাজিয়ে প্রিসলির গান গাইতেন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের (বর্তমানেও ওই নাম) দর্শক-শ্রোতারা বিমোহিত হয়ে শুনত জাফর ইকবালের গান। গান গাইতে গাইতে চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি খান আতাউর রহমানের সঙ্গে পরিচয় ও চলচ্চিত্রে আসা। তবে মৃত্যু পর্যন্ত গিটার ছিল তার সর্বণের সঙ্গী।
জাফর ইকবাল গানের তালিম নেননি কারও কাছ থেকে। বড় ভাই আনোয়ার পারভেজ ও বোন শাহনাজ রহমতউল্লাহকে দেখে নিজেও গান গাওয়ার চেষ্টা করতেন। কোথাও না শিখেও গান গেয়ে শ্রোতাদের মন কেড়েছিলেন । ‘ফকির মজনু শাহ’ ছবিতে রুনা লায়লার সঙ্গে প্লেব্যাক করেছিলেন আলাউদ্দিন আলির সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় । ‘বদনাম’ ছবিতে বড় ভাই আনোয়ার পারভেজের সুরে ‘হয় যদি বদনাম হোক আরও‘ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন। ‘কেন তুমি কাঁদালে’ শিরোনামে একটি অডিও অ্যালবাম প্রকাশ করেন আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘সুখে থাকো নন্দিনী’ গানটি গেয়ে দারুন শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনের ২৫ বছর (রজত জয়ন্তী) উদযাপন বিশেষ অনুষ্ঠানে গেয়েছিলেন ‘এক হৃদয়হীনার কাছে হৃদয়ের দাম কি আছে’ গানটি যা পরবর্তীতে শিল্পী রফিকুল আলমও গেয়েছিলেন ।