বিদেশের খবর: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মহীন মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, মহামারির আগে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার যেখানে ৩ দশমিক ৫ ভাগ ছিল। সেটি বেড়ে এখন ১৪ দশমিক ৭ ভাগ হয়েছে।এপ্রিল মাসেই দেশটিতে ২০ লাখ ৪০ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। তাই বলে মোটেও বিচলিত নন সেখানকার কর্মহীন মানুষেরা। কারণ অনেক চাকরিজীবীই চাকরিচ্যুত হওয়ায় আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। এতে বেকার হওয়া অনেকেই ঘরে বসে বেতনের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি আয় করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় বেকারদের সহায়তায় ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের ত্রাণ বিল বরাদ্দ হয়েছে। উইসকনসিন-ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির উইসকনসিন ইকোনমি–সম্পর্কিত গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক নোয়া উইলিয়ামস বলেছেন, বেকার শ্রমিকের প্রায় ৪০ শতাংশ বর্তমানে কর্মস্থলের চেয়ে বেশি উপার্জন করছেন।
মহামারি পরিস্থিতিতে কেয়ারস অ্যাক্ট হিসেবে পরিচিত ত্রাণ আইনটি বিভিন্ন উপায়ে বেকারত্বের সুবিধা বাড়িয়েছে। এটি সাপ্তাহিক সুবিধা বাড়িয়েছে এবং সুবিধার সময়কাল বৃদ্ধি করেছে। এ আইনে ফেডারেল সরকার বেকার শ্রমিকদের প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ৬০০ ডলার দেয়। এ ছাড়া বেকার মানুষেরা নিজ অঙ্গরাজ্য থেকে সপ্তাহে প্রায় ৫০০ ডলার পর্যন্ত সাহায্য পেতে পারেন। এর মানে হচ্ছে—যদি একজন ব্যক্তি চাকরি হারিয়ে সপ্তাহে ১ হাজার ১০০ ডলার বা মাসে ৪ হাজার ৪০০ ডলার সরকারের পক্ষ থেকে পাচ্ছেন। তাঁদের অনেকেই চাকরি থাকার সময় গড়ে দুই হাজার ডলারের নিচে আয় করতেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ ফেডারেল দারিদ্র্যসীমা অনুযায়ী, কেউ বছরে ১২ হাজার ৭৬০ ডলারের নিচে আয় করলে তাঁকে দরিদ্র বলে গণ্য করা হবে। কিন্তু বর্তমানে বেকারত্ব গ্রহণকারীরা তিন মাসেই সেই পরিমাণ অর্থ ঘরে বসেই পাচ্ছেন। এ ছাড়া অঙ্গরাজ্য সরকার অনেকের বিনা মূল্যে খাবার সহযোগিতাও দিচ্ছে।
এদিকে, হোয়াইট হাউজের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০ শতাংশে পৌঁছুতে পারে যেমনটি গত ৭২ বছরে দেখা যায়নি। গত বুধবারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্চের শেষ এবং এপ্রিলের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন চাকরিদাতারা দুই কোটি দুই লাখ চাকরি বন্ধ করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্রমশই খুলে দেয়া হচ্ছে যদিও এখানে এই ভাইরাস সংক্রমণে ৭৫ হাজারের বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছেন, সংক্রমিত হয়েছে সাড়ে ১২ লাখেরও বেশি লোক।