নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় ৮১৭ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ভাড়াটিয়া আব্দুল গফফরের মনি মুক্তা নামক চালের মিল থেকে এ গম উদ্ধার করা হয়। এ গম কেনা বেচার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি ইউপি সদস্য পরানপুর গ্রামের উপেন্দ্রনাথ মণ্ডলের ছেলে পবিত্র মণ্ডল, কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্বনলতা শানপুকুর গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে মনিরউজ্জামান ও দেবহাটা উপজেলার আস্কারপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মোজাহিদুল আলম মুকুল। কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক এসএম আজিজুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সরকারি কাজে বরাদ্দকৃত গম নিয়ম বহির্ভুতভাবে বিক্রির পর তা উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন পূর্ব নলতার বব্দুল গফফারের ভাড়া নেওয়া মনিমুক্তা এন্টারপ্রাইজে মজুদ করা হয়েছে মর্মে তিনি বুধবার বিকেলে খবর পান। এর ভিত্তিতে তার নেতৃত্বে পুলিশ বুধবার সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওই রাইসমিলে অভিযান চালায়। এ সময় ওই গুদাম থেকে ৮১৭ বস্তা গম উদ্ধার করা হয়। যার মোট ওজন ৪০ টন ৮৫০ কেজি। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, শ্যামনগরের কৈখালি ইউপি সদস্য পবিত্র কুমার মণ্ডল কাবিখা প্রকল্পের কাজ ২৩ টন চাল বিক্রি করে সুমি এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাফফর রহমানের কাছে বিক্রি করে। মোজাফফর ওই গম কালিগঞ্জের পূর্ব নলতার মনিমুক্তা এন্টারপ্রাইজের মালিক ভাড়াসিমলার সুলতানপুরের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন ভাড়া নেওয়া ওই রাইস মিল থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বাকী গমের মালিক কারা তাদেরকে সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। একাইসাথে খুলনা দূর্ণীতি দমন সমন্বিত কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তদন্তে নেমেছেন। তবে সুলতানপুরের ভাড়া রাইস মিলের মালিক আব্দুল গফফারকে আটক করতে না পারায় তার ছেলে মনিরুজ্জামান, মিলের ব্যবস্থাপক মোজাহিদুল আলম মুকুল ও শ্যামনগরের কৈখালি ইউপি সদস্য পবিত্র মণ্ডলকে আটক করা হয়। তাদেরকে বৃহষ্পতিবার ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালে ত পাঠানো হয়েছে। এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, শ্যামনগরের একজন বড়মাপের জনপ্রতিনিধির ভাই এর সঙ্গে সেখানকার জনৈক মোহাম্মদ আলীর সুসম্পর্ক রয়েছে। মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে ওই ৬০ টন গম কালিগঞ্জের পূর্ব নলতার শানপুকুর এলাকার ভাড়াটিয়া মিল মালিক আব্দুল গফফারের কাছে বিক্রি করা হয়। গফফার ধরা পড়লেই আসল সত্য বেরিয়ে পড়বে। ওই গম কাবিখা প্রকল্পের গম বলেও দাবি তাদের। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জেলা খাদ্য কর্মকর্তার জাকির হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কাবিখার গম এটা। অনেক সময় শ্রমিকরা জনপ্রতিনিধিদেও কাছ থেকে গম নিতে চান না। সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান মেম্বররা বিক্রয় করে থাকেন। এমনটি হলেও হতে পারে। বিস্তারিত না জেনে মন্তব্য করা যাবে না। খুলনা দূর্ণীতি দমন সমন্বিত কার্যালয়ের পরিচালক নাজমুল হাসান জানান, এ ঘটনায় দুদকের উপপরিচালক নীল কোমল পাল বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত তিনজনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ কওে বৃহষ্পতিবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।